রাত ১১:২৫, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ধান ছেড়ে সবজি চাষে বদলে গেছে শাহজাহানের জীবন


ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার খালাজোড়া এলাকার কৃষক মো. শাহজাহান মিয়া। এক সময় ধান চাষে ধারাবাহিক লোকসানে প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি শাহজাহান মিয়া। খুঁজে নেন নতুন পথ, সবজি চাষ। আর সেই সিদ্ধান্তই বদলে দিয়েছে তার জীবন। শাহজাহানের মতে, ধান করলে বছর শেষে শুধু লোকসান হয়। কিন্তু সবজি চাষে কম খরচে বেশি লাভ। এখন মাসে ৩৫ হাজার টাকার মতো আয় থাকে তার।

কিশোরগঞ্জের সন্তান শাহজাহান প্রায় ১৫ বছর আগে জমা-খরচের সঙ্কটে ধান চাষ ছেড়ে দেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমে লালশাক, ডাটাশাক, পুঁইশাক ও পাটশাকের আবাদ শুরু করেন। ভালো ফলন পেয়ে আরও উৎসাহ পান।

এরপর ধীরে ধীরে তিনি বেছে নেন জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ। কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার ছাড়া উৎপাদন করছেন লাউ, করলা, পেঁপে, বেগুন, মরিচ, বরবটি, টমেটো, চিচিঙ্গা, পালংশাকসহ বিভিন্ন মৌসুমি সবজি। বর্তমানে তিনি প্রায় ৯০ শতাংশ জমি বার্ষিক ইজারা নিয়ে বছরজুড়ে শীত-গ্রীষ্মের মিশ্র সবজি উৎপাদন করছেন।

শাহজাহান বলেন, আগে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ধান করতাম। লাভ তো দূরের কথা, সারাবছর ক্ষতি পুষাতেই হিমশিম খেতে হতো। এখন আলহামদুলিল্লাহ, সবজি চাষে বছরে চার লাখ টাকার বেশি আয় হয়। পরিবার নিয়ে ভালোই আছি।

তিনি সম্প্রতি ক্ষেতের চিচিঙ্গা ও লাউ বিক্রি করেছেন। সেখানেও পেয়েছেন দ্বিগুণ মুনাফা। এখন জমিতে শিম, বেগুন, টমেটোসহ শীতকালীন বিভিন্ন সবজি বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা মো. আজাদ মিয়া বলেন, শাহজাহান খুব পরিশ্রমী মানুষ। সারা বছরই মাঠে-ঘাটে কাজ করেন। তার কাছে পাওয়া যায় সবচেয়ে টাটকা সবজি। আরেক বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, তার ক্ষেতের সবজি খুব ভালো মানের। তাকে দেখে আমরাও সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছি।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, সবজি চাষে কম খরচে বেশি লাভ এ কারণে এ উপজেলায় এখন বাণিজ্যিকভাবে সবজি আবাদ বাড়ছে। শাহজাহান একজন উদাহরণযোগ্য কৃষক। আমরা তাকে সার, বীজসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বেকার যুবকরা সবজি চাষে এগিয়ে এলে বেকারত্ব কমবে, সঙ্গে উপজেলার অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।