বিকাল ৫:০০, ৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ত্রাণসামগ্রী আর কেন্দ্রীয়ভাবে নয়, স্থানীয়ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মাধ্যমে কেনা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান উপদেষ্টা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ অধিবেশন হয়।
উপদেষ্টা বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় নিয়ে জেলা প্রশাসকরা তাদের পর্যবেক্ষণ আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। যেগুলো তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার সেগুলো তাদের জানানো হয়েছে। যেগুলো পরে সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিষয়, সেগুলো আমরা নোট করে নিয়েছি। সেগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করবে।
তিনি বলেন, টিআর, কাবিখা, কাবিটার যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সেগুলো তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য বলা হয়েছে। বরাদ্দগুলোর নিরিখে যে প্রকল্পগুলো গ্রামীণ অবকাঠামোতে গ্রহণ করা হবে সেগুলো যাতে যথাযথভাবে হয়, সেগুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণ করার জন্য তাদের (ডিসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ফারুক-ই আজম বলেন, বরাদ্দের ক্ষেত্রে আগের যে কেন্দ্রীয় প্রথা ছিল সেগুলো আমরা পরিবর্তন করেছি। এ বিষয়ে তাদের ধারণা দিয়েছি। আগে কেন্দ্রীয়ভাবে কম্বল সংগ্রহ করে বিতরণ করা হতো, এখন সেগুলো মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করছে। স্থানীয়ভাবে ইউএনওরা সরাসরি ত্রাণসামগ্রী কিনবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কেন স্থানীয়ভাবে কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ করা হলে জটিল একটা অবস্থার মধ্যে পড়ছে। আমি লক্ষ্য করেছি, বিগত তিন বছর ধরে একই জায়গা থেকে একই জিনিস আসছে। টেন্ডারে আর অন্য কেউ অংশ নেয়নি। তাই আমরা মনে করছি এগুলোর স্থানীয়ভাবে ইউএনও যদি তাদের প্রয়োজন অনুসারে কিনে নিতে পারেন তাহলে তারা দ্রুত কিনে এটি যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে বিতরণ করতে পারবেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা আরও বলেন, পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কাজে বিলি-বণ্টনের ক্ষেত্রে যাতে কোনো বৈষম্য না হয়। গৃহহীনদের গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে যাতে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি না হয়, এগুলোর ব্যাপারে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা এগুলো স্থানীয়ভাবে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং আমাদের জানাবেন।
সাইক্লোন শেল্টারসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের যে স্থাপনাগুলো গ্রামীণ পর্যায়ে আছে সেগুলো যাতে যথাযথ ব্যবহার হয়, অনেক জায়গায় জনবল নেই, এ ভবনগুলো খালি পড়ে আছে। সেগুলো স্থানীয় মানুষের কল্যাণে, মানুষকে সম্পৃক্ত করে কার্যকর করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে ডিসি সম্মেলন অন্য বছরের তুলনায় আলাদা কি না? এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আগে যখন নির্বাচিত নেতারা থাকতেন এটার দায়িত্ব তারাই গ্রহণ করতেন অনেক বেশি। আমরা তাদের এটুকুই ধারণা দিয়েছি যে, সব দায়দায়িত্ব তাদেরই বহন করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমরা মনে করছি তাদের মধ্যেও একটি পরিবর্তন এসেছে। এই নিরিখে আমরা মনে করি কাজগুলো তারা অনেক বেশি স্বচ্ছতার সঙ্গে নেবেন। তাদের আড়াল করার মতো কোনো বিষয় থাকবে না, সরাসরি তারা দায়ী হবেন।