রাত ৮:১৯, ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম:

ফিড-বাচ্চা সিন্ডিকেট বন্ধ না হলে ডিমে স্বস্তি ফিরবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিম আমদানি না করে প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট বন্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে ছোট খামারি বা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পর্যাপ্ত সহায়তা দিলে তারা সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে বলেও দাবি করেছে সংগঠনটি।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেছেন, বাংলাদেশের বাজারে ডিম সরবরাহের কোনো ঘাটতি ছিল না এবং দামও নিয়ন্ত্রণে ছিল। কারণ সারাদেশে ছোট ছোট খামার ছড়িয়ে ছিল। প্রতিটি অঞ্চলে স্থানীয় খামারি তাদের উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ করত, যা বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করত। বড় কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর খামারের তুলনায়, ছোট খামারের মাধ্যমে পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল।

তিনি বলেন, বড় কর্পোরেট খামারগুলোর অধিক সংখ্যক উৎপাদন ক্ষমতা এবং ব্যাংক ঋণ সুবিধার কারণে তারা বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে। এর ফলে, বাজারের দাম স্থিতিশীল থাকে না এবং মাঝে মধ্যে দাম বেড়ে যায়।

সুমন হাওলাদার বলেন, এখন সময় এসেছে ব্যাংকগুলোকে বড় কর্পোরেট খামারিদের অর্থায়ন বন্ধ করে, ছোট খামারিদের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি করার। কারণ, ছোট খামারিদের মধ্যে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরামর্শ, প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় অর্থায়ন দিলে তারা দ্রুত উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে পারবে। এতে সারাদেশে খামারগুলোর সংখ্যা বাড়বে এবং ডিম সরবরাহে কোনো ঘাটতি থাকবে না।

ছোট খামারিদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হলে, তারা খামারের আকার বাড়াতে পারবে। ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর দীর্ঘমেয়াদী সুফল হিসেবে, স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, চাকরি সৃষ্টি হবে, এবং সাপ্লাই চেইনও মজবুত হবে
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার

ছোট খামারিদের সহায়তা দিলে অল্প দিনের মধ্যে সুফল পাওয়া সম্ভব উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ছোট খামারিদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হলে, তারা খামারের আকার বাড়াতে পারবে। ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর দীর্ঘমেয়াদী সুফল হিসেবে, স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, চাকরি সৃষ্টি হবে, এবং সাপ্লাই চেইনও মজবুত হবে।

সুমন হাওলাদার কন্ট্রাক্ট ফার্মিংকে নীল চাষের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, বর্তমানে দেশের পোল্ট্রি খাতে কর্পোরেট কোম্পানির আধিপত্য বাড়ছে। এই কোম্পানিগুলো সাধারণত কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বা চুক্তিভিত্তিক খামার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ব্যবহার করে পোল্ট্রি উৎপাদন পরিচালনা করেন। এতে খামারি তাদের উৎপাদন সামগ্রী যেমন বাচ্চা, ফিড এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য কোম্পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। কর্পোরেট কোম্পানিগুলো এভাবে পোল্ট্রি উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। এর ফলে ক্ষুদ্র খামারিরা সরাসরি বাজারে পণ্য বিক্রি করতে পারছে না এবং তাদের লাভ কমে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে পোল্ট্রি খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করে কর্পোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেটের আধিপত্য কমানোর দাবিও জানিয়েছেন তিনি।