সন্ধ্যা ৭:৫৫, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
স্পোর্টস ডেস্ক
বাংলাদেশের নারী ফুটবলের দীর্ঘদিনের পৃষ্ঠপোষক ওয়ালটন। সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন দলকে আজ বাফুফে ভবনে সম্মাননা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তা মিলিয়ে সাফ কন্টিনজেন্টের ৩২ সদস্যকে ফ্রিজ উপহার দিয়েছে ওয়ালটন।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অনেক ফুটবলারের বাড়ি দুর্গম এলাকায়। নাগরিক অনেক সেবা বেশ দুরহ। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা জানালেন, ‘আমাদের মধ্যে মনিকার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। ওর বাড়ি যেতে এখনো দুই কিলোমিটার পথ কষ্ট করতে হয়।’
মনিকার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, তাই তার বাড়িতে ফ্রিজ ব্যবহার করার উপায়ও নেই। ওয়ালটনের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন বলেন, ‘আশা করব খুব দ্রুত তার বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা হবে। যারা ফ্রিজ নিতে চান না এর পরিবর্তে অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন।’
ওয়ালটন বিগত সময় নারী ফুটবলে টিভি ও অন্য সামগ্রী দিয়ে সম্মাননা দিয়েছে। এবার ফ্রিজ দিলেও একটু ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। বাফুফে ভবনে সরাসরি ফ্রিজ হস্তান্তর হয়নি। পুরস্কারপ্রাপ্তরা যে যার সুবিধাজনক অবস্থানের নিকটস্থ ওয়ালটন শো রুম থেকে ফ্রিজ সংগ্রহ করতে পারবেন। সাবিনাদের কোচ পিটার বাটলার বৃটিশ। তিনি ফ্রিজ উপহার পেয়ে মজা করে বলছিলেন, ‘সৌদি এয়ারলাইন্সে আমার ওজন (লাগেজ) মাত্র ৩০ কেজি।’
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলে অনেকের বাড়িতেই বিদ্যুত ছিল না। জুনিয়র ও সিনিয়র সাফে সাফল্যের পর তাদের বাড়িসহ এলাকায় বিদ্যুতের আলো এসেছে। সিনিয়র ফুটবলার মনিকার রাঙামাটির বাড়িতে এখনো মেলেনি বিদ্যুত। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর নারী ফুটবলাররা যার যার ব্যক্তিগত সমস্যার কথা উল্লেখ করেছিলেন। তাই অপেক্ষায় আছেন সেই সমাধানের।
নারী ফুটবলারদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে আগামীর পথচলা ও নানা সমস্যার বিষয়। নারী ফুটবল উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, ‘আমরা নারী ফুটবলারদের আরো সুযোগ-সুবিধা দিতে চাই। এজন্য সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা দরকার।’ সাবিনাদের সঙ্গে বাফুফের আনুষ্ঠানিক চুক্তি শেষ। সেই চুক্তিতে সিনিয়র ফুটবলাররা মাসে ৫০ হাজার টাকা করে পেতেন। এবার সাবিনাদের প্রত্যাশা একটু বেশিই, ‘চ্যাম্পিয়ন হলে বেতন বেশির আশা তো থাকেই। এই বিষয়ে আপার সঙ্গে আজ আলাপ হওয়ার কথা।’
সাফে সাবিনাদের কোচ ছিলেন পিটার বাটলার। তার সঙ্গে নারী ফুটবলাদের সম্পর্ক খুব বেশি ভালো নয়। তাই নারী ফুটবলে কোচ নিয়ে ফুটবলাঙ্গনে প্রশ্ন অনেক। আজকের অনুষ্ঠানে এ নিয়ে প্রশ্ন হলে নারী উইংয়ের প্রধান বলেন, ‘তার সঙ্গে ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। এখন মাত্র নভেম্বরের মাঝামাঝি। অনেক সময় আছে, অপেক্ষা করেন।’
গুঞ্জন রয়েছে পিটার বাটলারকে পুরুষ দলের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে। কিংস অ্যারেনায় মালদ্বীপের দু’টি ম্যাচ দেখেছেন তিনি। এ নিয়ে পিটারের মন্তব্য পেশাদার, ‘বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল নিয়ে আমি মন্তব্য করব না। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা কাজ করছে। ফেডারেশনের সঙ্গে যাই হোক সেটা আমি পেশাদারিত্বের মধ্যেই করতে চাই।’
সাবিনা কোচ সম্পর্কে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কোচ নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। যেই কোচ থাকুক অনুশীলন ও নির্দেশনা মানতে হবে। কোচ নিয়ে সভাপতি বা কারো সঙ্গে আমাদের কথা হয়নি।’