সকাল ৭:২৪, ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে চলার পেছনে আমদানিজনিত কারণকে দায় দিচ্ছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার।’
রাজধানীর একটি হোটেলে অর্থনীতির হালনাগাদ বিষয়াদির ওপর গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
সেমিনারে আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ স্বত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহার করে উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জন’। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
ড. শামসুল আলম বলেন, ‘এখন যে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, সেটা মূলত আমদানিজনিত কারণে হচ্ছে। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক কমানোর পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য আমদানি সহজ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ক্ষেত্রে বিশেষত রেমিটেন্স আহরণের ওপর প্রণোদনা দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো প্রবাসীদের সুবিধা প্রদান করা। এর মাধ্যমে মূলত দেশের একটি জনগোষ্ঠিকে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ইউনিফাইড বা একক বিনিময় হারের দিকে যেতে হবে।’
সেমিনারে পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার, পরিচালক ড. এম এ রাজ্জাক ও পরিচালক ড. বজলুল এইচ খন্দকার তিনটি পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার বলেন, ‘কোনো দেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি ৩ শতাংশের উপরে গেলে সেটা ঝুঁকিপূর্ণ। বিগত অর্থবছরে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি ৪ শতাংশ হয়ে গেছে।’
‘এটাকে যদি আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশের মধ্যে আনা না যায়, তাহলে সেটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। একক মুদ্রা বিনিময় হার নির্ধারণ এবং রপ্তানি ও রেমিটেন্স বাড়ানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
অর্থনীতিবিদ ড. এম এ রাজ্জাক তার প্রবন্ধে বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় কর-জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশ সবচেয়ে পিছিয়ে। কিন্তু উন্নত অর্থনীতির দেশের পর্যায়ে যেতে হলে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। বিশেষ করে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ সম্পদ বা রাজস্ব আয় বাড়ানোটা খুব জরুরি।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির, এসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. আসিফ দৌলা, জার্মানভিত্তিক সংস্থা এফএসএফের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. নাজমুল হোসেন, ফরেন কমনওয়েলথ এন্ড ডেভলপমেন্ট অফিস বাংলাদেশের ডেভলপমেন্ট ডিরেক্টর ম্যাট কেনেল প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।