যশোরে প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা, দেড় সপ্তাহ ধরে কাজ নেই শ্রমিকদের

যশোরে প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা, দেড় সপ্তাহ ধরে কাজ নেই শ্রমিকদের

হাফিজুর শেখ, যশোর : যশোরে প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা,দেড় সপ্তাহ ধরে কাজ নেই শ্রমিকদের, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আছি,সন্ধধানে। টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যশোরের জনজীবন। প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রা। রোববার (৮ জানুয়ারি) সকালে যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে শৈত্যপ্রবাহ মৃদু থেকে মাঝারিতে উঠে এসেছে। আর এ শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছেন শ্রমজীবী মানুষরা।

জানা যায়, গত কয়েক বছর পর এবার পৌষের মাঝামাঝিতে এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। পৌষের মাঝামাঝি হিসেবে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যশোরে দীর্ঘ সময় ধরে শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করেছিল। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এবার জানুয়ারির শুরু থেকেই যশোরে তাপমাত্রা কমতে থাকে। শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ। শৈত্যপ্রবাহের শুরুতেই ৫ জানুয়ারি যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এরপর তাপমাত্রা কমতে কমতে ৭ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৬ এবং রোববার ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।

এদিন যশোরের সাথে চুয়াডাঙ্গায়ও দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যশোরে বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অফিস স্ববাধী মত কে এ তথ্য জানান,এদিকে, প্রচণ্ড শীতের কারণে ব্যহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড। হাড় কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হচ্চেনা সাধারণ মানুষ। তবে ঘর থেকে বের হয়েও কাজ মিলছে না শ্রমজীবী মানুষের।যশোর শহরের লালদীঘি পাড়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হয়ে থাকেন। রোববার সকালে সেখানে দেখা গেছে, কাজ না পাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কিছু মানুষ অনেক বেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন কাজের আশায়।শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার বাসিন্দা বদিয়ার জামাল (৫৫) বলেন, ৪৫ বছর ধরে শ্রমিকের কাজ করছি। আগে স’মিলে কাজ করতাম। এখন শ্রমিক হিসেবে কাজ করি।

চার-পাঁচদিন ধরে কাজের জন্য আসি। ভোর ৬টায় এসে বসে থাকি। কিন্তু কাজ পাচ্ছি না। কি খাবো, না খাবো তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। কোনো সাহায্য সহযোগিতাও পাচ্ছি না।শংকরপুর এলাকার আনিস গাজি পনেরো বছর ধরে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি বলেন, দেড় সপ্তাহ ধরে কাজ পাচ্ছি না। কষ্ট করে আসছি, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকছি। কিন্তু কোনো কাজ পাচ্ছি না।পালবাড়ির শাহাদাত রিকশা চালক বলেন,সকালে বের হইছি শীতে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। ঠিকমতো চালাতে পারছিনা। ভাড়ার গাড়ী ঠিক মতো ভাড়া উঠাতে পারছিনা। ফোলাপানরে কি খাওয়াবো তাই ভাবছি।

শীতের কারণে কাজ হচ্ছে না। তাই আবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাচ্ছে।উপশহর সি ব্লক এলাকার মোহাম্মদ লিটন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে কাজ হচ্ছে না। শীতে একদিন কাজ পাই তো, তিনদিন পাই না। দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। ঘর ভাড়া বাকি পড়ে যাচ্ছে।বাহাদুরপুর বাঁশতলা এলাকার বৃদ্ধ ওয়াজেদ মিস্ত্রি বললেন, শীতে কোনো কাজ পাচ্ছি না। মহাজনরা আসছে না। একটা কাজ করছিলাম। কিন্তু শীতের কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। কাজও নেই। আবার সাহায্য সহযোগিতাও পাই না। তাই শীতে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।

More News...

বিড়ি শিল্পের শুল্ক প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন

কুষ্টিয়ায় নকল আকিজ বিড়িসহ বিড়ি তৈরির উপকরণ জব্দ