পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া গেল পৌনে ৮ কোটি টাকা

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া গেল পৌনে ৮ কোটি টাকা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১০টি দানবাক্স থেকে প্রাপ্ত ২৭ বস্তায় মোট টাকার পরিমাণ রেকর্ড ও অবাক করে ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে রাত পৌনে ২টা (টানা ১৮ ঘন্টা) পর্যন্ত চলে গণনা। প্রাপ্ত অর্থ এ যাবতকালে রেকর্ড পরিমাণ। ৪ মাস আগের হিসাবের চেয়ে এবার ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৬ হাজার ১১৪ টাকা বেশি পাওয়া গেছে। রাত পৌনে ২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ করপোরেট শাখার ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৭টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ উপস্থিত ছিলেন।

দানবাক্স থেকে প্রাপ্ত টাকা প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। ১০টি দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে ২৭ বস্তা টাকা। পরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা। দিনভর চলে গণনা। রাত পৌনে ২টার দিকে গণনা শেষে চূড়ান্ত হিসাব সম্পর্কে জানানো হয়। টাকার পাশাপাশি দানবাক্সগুলো থেকে পাওয়া যায় বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।

প্রতি ৩ মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। রমজানের কারণে এবার খোলা হয়েছে ৪ মাস ১০ দিন পর। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা। তখন ৩ মাস ২০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল।

টাকা গণনার কাজে মাদরাসার ১১২ জন শিক্ষার্থী, ব্যাংকের ৭০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য অংশ নেন। দানবাক্সে অর্থ ছাড়াও প্রতিদিন দান হিসেবে পাওয়া যায় পবিত্র কুরআন, হাঁস, মোরগ, গরু, ছাগল, দুধসহ নানা সামগ্রি। এসব সামগ্রি প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়।

উল্লেখ্য, জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে ৩ একর ৮৮ শতাংশ জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। কথিত আছে, প্রায় পাঁচশ বছর পূর্বে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক এক ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত।

 

More News...

১৭৩ জন বাংলাদেশী মিয়ানমার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান