জব্দ রোলস রয়েস গাড়ি খালাসে গুনতে হবে ৮৫ কোটি টাকা

জব্দ রোলস রয়েস গাড়ি খালাসে গুনতে হবে ৮৫ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জব্দ হওয়া রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ি
শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হাতে জব্দ হওয়া রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের একটি বিলাসবহুল গাড়ির আমদানিকারককে ৫৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে বিমোচন জরিমানা ৪০ লাখ টাকা। একই সঙ্গে শুল্ক কর হিসেবে পরিশোধ করতে হবে আরও ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে গাড়িটি খালাসে জরিমানা গুনতে হবে ৮৫ কোটি টাকা।
গাড়িটি জব্দ হওয়ার পর শুল্কায়ন না করেই খালাস নিয়ে লুকিয়ে রাখার অভিযোগে শুল্ক গোয়েন্দাদের করা কাস্টমস মামলায় গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান এ আদেশ দেন। বিষয়টি মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) গণমাধ্যমের খবরে আসে।
আদেশে ৩০ দিনের মধ্যে শুল্ক কর ও জরিমানা পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আমদানিকারক চাইলে কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রাইব্যুনালে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।
গত ৬ জুলাই আমদানি করা বিলাসবহুল রোলস রয়েস গাড়িটি জব্দ করার তথ্য জানায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। শুল্কায়ন না করেই গাড়িটি সরিয়ে ঢাকার বারিধারার একটি বাসায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

জানা যায়, চট্টগ্রাম ইপিজেডের হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করে। গত এপ্রিলে গাড়িটি আমদানির পর চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকার ফ্যাক্টরিতে নেওয়া হয়। এরপর শুল্কায়নের জন্য কাগজপত্র দাখিল করা হয় কাস্টমসে। তবে শুল্কায়নের আগেই গত ১৭ মে গাড়িটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহিরের ঢাকার বারিধারায় বাসায় সরিয়ে নেওয়া হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর প্রথমে চট্টগ্রাম ইপিজেডে অভিযান চালায়। গাড়িটি সিইপিজেডের কারখানায় না পেয়ে গত ৪ জুলাই কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শামসুল আরেফিন খানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বারিধারার বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওই বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়।
ওই সময়ে কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. শামসুল আরেফিন খান জাগো নিউজকে বলেছিলেন, গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা হয়েছিল। তবে যে এসআরও বলে গাড়িটি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা নেওয়া হয়েছে তাতে দুই হাজার সিসি পর্যন্ত কার আমদানিতে আমদানিকারক শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন। কিন্তু বিলাসবহুল গাড়িটির বনেটে লেখা স্টিকারে দেখা যায়, এটি রোলস রয়েস মোটরকার, যার সিসি ৬৭৫০। এতে উল্লেখিত এসআরওর সুবিধা এই গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়ার কথা নয়।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, গাড়ির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৬ হাজার ৭৫০। এ ধরনের গাড়িতে শুল্কায়িত মূল্যের আটগুণ শুল্ককর দিতে হয়। এটি স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল ধরনের গাড়ি। গাড়িটি উৎপাদনের সাল ২০২১। মডেলের নাম কুলিনান এসইউভি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেছেন, বিচারাদেশ অনুযায়ী রোলস রয়েস আমদানিকারককে ৫৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়। ৪০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা আরোপ করা হয়। তাছাড়া করমুক্ত সুবিধা না পাওয়ায় ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা শুল্ক কর দিতে হবে। সব মিলিয়ে ৮৫ কোটি টাকার কিছু বেশি পরিশোধ করতে হবে।

More News...

১৭৩ জন বাংলাদেশী মিয়ানমার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান