বরিশাল জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩১ ভোটারকে আটকে রাখার অভিযোগ

বরিশাল জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩১ ভোটারকে আটকে রাখার অভিযোগ

বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশাল জেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজ সমর্থিত সদস্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ৩১ জনপ্রতিনিধি ভোটারকে কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার খালিদ হোসেন স্বপন তাদের আটকে রেখেছেন বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান মিলন অভিযোগ করেছেন। মিলন একই উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও। বরিশাল জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ ৩নং আসনে সদস্য প্রার্থী হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাতি প্রতীকের জাহাঙ্গীর হোসেন আকন। তিনি খালিদ হোসেন স্বপনের প্রার্থী এবং প্রধান সমর্থক। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক তালা প্রতীকের মাইনুল হোসেন পারভেজ। ওই ৩১ জনের মধ্যে কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারীসহ ১০ মেম্বার, চাঁদপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার রাঢ়ীসহ ৮ মেম্বার, আগরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ মেম্বার, দেহেরগতির ২ মেম্বার ও মাধবপাশার ৩ মেম্বার রয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন বলেন, নির্বাচনে জাহাঙ্গীরের প্রধান সমর্থক হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার খালেদ হোসেন স্বপন। তিনি তার সমর্থিত প্রার্থীকে জয়ী করতে নানা কৌশল অবলম্বন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে নির্বাচনে ভোটার জনপ্রতিনিধিদের বাবুগঞ্জ উপজেলার কামিনী রিফ্রেশ জোন হোটেলে আলোচনা সভার কথা বলে একত্রিত করেন। পরে তাদেরকে গাড়িযোগে সেখান থেকে নিয়ে যান কুয়াকাটায়। সেখানের আবাসিক হোটেল মরিয়মে নিয়ে আটকে রাখেন। মিলনের দাবি ৩৪ জন জনপ্রতিনিধি ভোটারকে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। এদের মধ্যে মহিলা জনপ্রতিনিধি ভোটারও রয়েছেন। বিষয়টি জানার পর প্রতিটি বাড়িতে তাদের পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করছেন। বিষয়টি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান মিলন। একই সাথে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকেও জানিয়েছেন তিনি।

বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল বলেন, উপজেলার মাধবপাশা ও কেদারপুর ইউনিয়নের দুই সদস্য তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাদেরও নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা যাননি। সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী আগরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান হিমু বলেন, তার ইউনিয়নের ৮ জন মেম্বারকে কুয়াকাটায় নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তালা প্রতীকের প্রার্থী মাইনুল হোসেন পারভেজ বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার খালেদ হোসেন স্বপন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩১ জনপ্রতিনিধি ভোটারকে নিয়ে কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মরিয়মে আটকে রেখেছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা বারবার তাকে মোবাইল ফোনে কল করছেন তাদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য। তাদের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও মোবাইল বন্ধ পাচ্ছেন বলে জানান পারভেজ। বরিশাল জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, জনপ্রতিনিধি ভোটারদের কুয়াকাটার একটি হোটেলে আটকে রাখার বিষয়টি জানার সাথে বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসানকে অবহিত করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

হাতি প্রতীকের জাহাঙ্গীর হোসেন আকন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কে কাকে কোথায় আটকে রেখেছে তা তার জানা নেই। তার মতে, তারা কুয়াকাটায় বেড়াতেও যেতে পারেন। তবে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালিদ হোসেন স্বপনের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

More News...

বিড়ি শিল্পের শুল্ক প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন

কুষ্টিয়ায় নকল আকিজ বিড়িসহ বিড়ি তৈরির উপকরণ জব্দ