অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : মির্জা ফখরুল

অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠনসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার বিএনপির উদ্যোগে ‘কোভিড-১৯ বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা-সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় মহাসংকটে জাতির ভবিষ্যত’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা অর্থনীতি, রাজনীতি, আমাদের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করছে। এজন্য শিক্ষাবিদ,অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা জাতীয় কমিশন এবং পরিকল্পনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিফটসহ বিভিন্নরকম কারিক্যুলাম প্রণয়ন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে।

করোনা প্রকোপের পর থেকে অসংখ্য মানুষ যেভাবে বেকার হয়েছে ঠিক একইভাবে অসংখ্য শিক্ষকও বেকার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে অসংখ্য শিক্ষক বেকার হয়ে গেছে, কর্মহীন হয়ে গেছে। সরকার সম্পূর্ণভাবে তাদের নেগলেট করেছে। লক্ষ লক্ষ শিক্ষক শহর এবং গ্রামে যারা কিন্ডার গার্ডেটন চালাতেন তা বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে সরকার পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারের আন্তরিকতা অভাব ও দুরভিসন্ধি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। আগামী ২০ বছর এই ক্ষতি নিয়েই আমাদের এগুতে হবে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে অবিলম্বে শ্রেনী শিক্ষা চালুর দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, যেখানে সব কিছু খোলা, কলকারখানা খোলা, দোকান-পাট খোলা সেখানে আর কোনো যুক্তি নাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার।

ডাবল শিফট করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শ্রেনী শিক্ষা চালু, উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে অনলাইন ও সরাসরি শ্রেনীর শিক্ষার সমন্বয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষার্থীদের অতি দ্রুত টিকা প্রদানের ব্যবস্থা, ড্রপ আউট দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত প্রণোদণা ঘোষণা, যোগ্য, উপযুক্ত ও মেধাবী প্রজন্ম তৈরি করার জন্য যুগোপযুগী সিলেবাস প্রণয়ন এবং শিক্ষাখাতে দক্ষতা বৃদ্ধি করাসহ ৬ দফা প্রস্তাবও তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক খন্দকার মোশাররফ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অনলাইন ক্লাস যদি কার্যকর হতো তাহলে দেশে দেশে এতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠত না। আবার শহরের শিক্ষা ব্যবস্থা ও গ্রামীন শিক্ষা ব্যবস্থা এক নয়। করোনাকালে ঘরবন্দি থাকায় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্থ। শিক্ষার্থীরা সশরীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকতে পারত তাহলে একাডেমিক শিক্ষার বাইরেও সামাজিক,সংস্কৃতি নানাভাবে নিজেকে তৈরী করতে পারত।

তিনি আরও বলেন, প্রকৃত শিক্ষা না থাকার কারণেই নায়িকা পরীমনিদের জন্ম হয়, কিশোর গ্যাং তৈরী হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও মদের আড্ডা বন্ধ হয় না। অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা উচিত। অভিভাবক ফোরামের পক্ষে অধ্যাপক কামরুল হাসান এবং এএনএম মাহিদ উদ্দিন ভুঁইয়া দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভাবনা ও সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।

বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় চার ঘন্টার অধিক সময়ের এই আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ প্রমুখ।

এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম ও শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সভাপতি সেলিম ভুঁইয়াও তাদের মতামত রাখেন।

More News...

ওবায়দুল কাদেরের মস্তিষ্ক অলস-হৃদয় দুর্বল : রিজভী

বিএনপি বাঙালি সংস্কৃতিকে সহ্য করতে পারে না: কাদের