সন্ধ্যা ৭:৪০, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলছে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন। গত ১২ নভেম্বর থেকে অনলাইনে এ আবেদন করতে পারছে শিক্ষার্থীরা। এ প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতি বছরের মতো এবারও সরকারি স্কুলে আসনের চেয়ে দ্বিগুণ আবেদন পড়লেও বেসরকারি স্কুলে আসনের বিপরীতে ৮০ শতাংশ আসন ফাঁকা রয়েছে।রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত জমা পড়া আবেদন বিশ্লেষণ করে এমনটিই জানা গেছে।
ভর্তি আবেদন কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। দপ্তরটির মাধ্যমিক শাখা থেকে আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত সময়ের পাওয়া তথ্য বলছে, ১২ দিনে (১২-২৪ নভেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে মোট ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছে। তারা মোট স্কুল পছন্দ দিয়েছে ১১ লাখ ৩ হাজার ৫২২টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে সরকারি স্কুলগুলোতে। সরকারি স্কুলে এক লাখ ৮ হাজারের আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে চারগুণের বেশি। অন্যদিকে ১০ লাখের বেশি আসন থাকার পরও বেসরকারি স্কুলে আবেদন পড়েছে মাত্র দুই লাখের বেশি।
প্রতি বছরের মতো এবারও সরকারি স্কুলে ভর্তিতে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সারা দেশের ৬৮০টি সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য আসন আছে ১ লাখ ৮ হাজার ৬৬২টি। এর বিপরীতে রোববার দুপুর পর্যন্ত আবেদন করেছে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৬ জন শিক্ষার্থী। তারা পছন্দ দিয়েছে মোট ৭ লাখ ৪ হাজার ১৩৬টি। আবেদন শুরু হওয়ার ১২ দিনে আসন সংখ্যার প্রায় চারগুণ আবেদন জমা পড়েছে। অর্থাৎ একটি আবেদনের বিপরীতে ৪ জনের বেশি আবেদন করেছে। এ আবেদন চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। বাকি ৬ দিনে আরও দেড় থেকে দুই লাখ আবেদন পড়তে পারে বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ভর্তির নিয়ম অনুযায়ী— একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুল চয়েজ (পছন্দ) দিতে পারবে।
অন্যদিকে ঢাকা ও বিভিন্ন মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের ৩ হাজার ১৯৮টি বেসরকারি স্কুলের ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭১টি আসনে ভর্তির জন্য আবেদন করেছে ২ লাখ ১৭ হাজার ২৫২ জন শিক্ষার্থী। তারা পছন্দ দিয়েছেন মোট ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৩৮৬টি। সরকারি স্কুলের চেয়ে ৮ গুণের বেশি আসন হওয়ার পরও এখানে ৭ লাখ ৯০ হাজারের বেশি আসন এখনো খালি। অর্থাৎ বেসরকারি স্কুলগুলোতে এখনো প্রায় ৮০ শতাংশ আসন খালি রয়ে গেছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পর্যায়ের ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ দুপুর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে মোট ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছে। তারা মোট তারা পছন্দ দিয়েছে ১১ লাখ ৩ হাজার ৫২২টি। আগামী ১২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুদের স্কুল নির্ধারিত হবে।
তিনি জানান, উপজেলা পর্যায়ের বেসরকারি স্কুলগুলো স্থানীয় ভর্তি কমিটির অনুমোদন নিয়ে সরাসরি লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে। তাদের জন্য অনলাইনে আবেদনের প্রয়োজন পড়বে না।
সরকারি স্কুলে আবেদন বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় সবাই তার সন্তানকে সরকারি স্কুলে ভর্তি করাতে চায়। বিশেষ করে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন মহানগর ও জেলা সদরে এ প্রবণতা বেশি। এর কারণ হলো সরকারি স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষার মান বেসরকারির চেয়ে ভালো। এছাড়াও খরচের বিষয়টি তো রয়েছেই।ভর্তির ঘোষিত সময় সূচি অনুযায়ী, আসন্ন শিক্ষাবর্ষের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানিয়েছে, এবার সারা দেশের মোট পাঁচ হাজার ৬২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন নেওয়া হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সরকারি হাই স্কুল ৬৮২টি এবং বেসরকারি হাই স্কুল ৪ হাজার ৬৪৩টি। এসব প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণিতে মোট ১১ লাখ ১৬ হাজার ৬৩৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে।