পাইকগাছায় অনুষ্ঠিত হল জমজমাট পিঠা উৎসব

পাইকগাছায় অনুষ্ঠিত হল জমজমাট পিঠা উৎসব

শাহাজামান বাদশা, পাইকগাছা (খুলনা) : হাজার বছরের সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী আমরা। খাদ্যরসিক বাঙালি প্রাচীনকাল থেকে প্রধান খাদ্যের পরিপূরক মুখরোচক অনেক খাবার তৈরি করে আসছে। তবে পিঠা সর্বাধিক গুরুত্বের দাবিদার। শুধু খাবার হিসেবেই নয় বরং লোকজ ঐতিহ্য এবং নারীসমাজের শিল্প নৈপুণ্যের স্মারক রূপেও পিঠা বিবেচিত হয়। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা। যখনই পিঠা-পায়েস, পুলি কিংবা নাড়ুর কথা উঠে তখনি যেন শীত ঋতুটি আমাদের চোখে ও মনে ভেসে ওঠে। প্রতি শীতেই গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা পুলির উৎসব। তারই ধারাবাহিকতায় পাইকগাছা সরকারী কলেজে এই প্রথম পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

৩৫ রকমের পিঠার সাথে পরিচিত হয়েছে পাইকগাছার মানুষ। বুধবার গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসবের আয়োজন করে পাইকগাছা সরকারি কলেজ। ৮টি স্টল স্থান পায় এ উৎসবে। শিবসা, কপোতাক্ষ, মিনহাজ, পশুর, করুলিয়া, রূপসা, ভৈরব ও হংসরাজ সহ প্রতিটি স্টলের নামকরণ করা হয় এলাকার নদ-নদীর নামে। নবান নন্দনী, ক্ষীর বাদাম, পুডিং, দুধ গোকুল, ম্যারাপিঠা, মিষ্টি কুমড়া পিঠা, আপেল পিঠা, চকলেট মালাই পিঠা, কদম পুলি, গোলাপ পিঠা, ভাপাপুলি, নকশী পিঠা, গোকুল পিঠা, তক্তি পিঠা, দই ভাপা পিঠা, মুগ পিঠা, সেমাই পিঠা, ছিটা পিঠা, পাটি সাপটা, বিবিখান, মুগপাকান, খেঁজুর পিঠা, দুধ পাকন, নারিকেলের বার্মি, কদম বাহারী, রস গোলাপ, চন্দ্র মল্লিকা, ফুলঝুরি, দুধ চিতই, রস চিতই, সূর্যমুখী, জামাই পিঠা, শামুক পিঠা, বারানদেশ পিঠা, বিট বরফি, চিংড়ি পিঠা, ডোনাট, সুন্দরী পাটিসাপটা ও কদম পুলি সহ প্রত্যেকটি স্টলে প্রায় ৩৫ রকমের পিঠা প্রদর্শন করা হয়। নির্দিষ্ট মূল্যে এসব পিঠা দর্শনার্থীদের কাছে বিক্রয় করা হয়। এবারই প্রথম এতো রকমের পিঠার সাথে পরিচিত হয় এলাকার মানুষ। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম গ্রাম বাংলার নানা স্বাদের নানা রকমের পিঠার সাথে পরিচিত হয়।

দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে কলেজ প্রাঙ্গণ। মাসুমা আক্তার বলেন, আমার স্টলে ৩৫ রকমের পিঠা প্রদর্শন করা হয়েছে। প্রভাষক লিলিমা খাতুন জানান, ২৮ প্রকার পিঠা প্রদর্শন করা হয়। প্রভাষক রুবাইয়া শারমিন হায়াত বলেন, আমরা স্টলেই পিঠা তৈরী করে দর্শনার্থীদের মাঝে বিক্রয় করেছি। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সকালে ফিতা ও কেক কেটে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। অধ্যক্ষ প্রফেসর সমরেশ রায়ের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক আছাবুর রহমান শিমুলের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আরিফুজ্জামান, ওসি ওবাইদুর রহমান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার, উপাধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রভাষক স্বপন ঘোষ, আব্দুর রাজ্জাক বুলি, মোমিন উদ্দীন ও তারেক আহম্মেদ।

More News...

বিড়ি শিল্পের শুল্ক প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন

কুষ্টিয়ায় নকল আকিজ বিড়িসহ বিড়ি তৈরির উপকরণ জব্দ