দুপুর ২:০৭, ৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম:

সারাদেশ এখন নির্যাতনের কারখানা: ফখরুল

সরকার পুরো দেশকে হীরক রাজার দেশের মতো নির্যাতনের কারখানা বানিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নির্দলীয় সরকার ও নির্দলীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে।

বুধবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রবূমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারকে দায়ী করে ফখরুল বলেন, লুটপাট থেকে সরকার ভাগ পায়। তাদের লোকজন সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়াচ্ছে। এজন্য দাম কমাতে পারবে না।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিকল্পিতভাবে লুটপাট করছে দেশের সম্পদ। এরপর তা বিদেশে পাঠাচ্ছে। যা নিয়ে সারাবিশ্বে তুলকালাম হচ্ছে।

কথা বললেই নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেয়া হচ্ছে- অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, সারা ঢাকায় সাবা নামের একটি মেয়ের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। তার বাবা গুম হয়েছে। আমরা কি খোঁজ নিয়েছি পরিবারটির কেমন আছে? গতকাল তার মা ফোন করেছিল বড় ছেলে অসুস্থ। চিকিৎসার খরচ জোগানোর সামর্থ নেই। এই অবস্থা সবখানে চলছে। কী অপরাধ ছিল তাদের। তারা কথা বলতে চেয়েছিল। এখন কথা বললেই মামলা দেয়া হচ্ছে। আকারে ইঙ্গিতে কথা সরকারের বিরুদ্ধে গেলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেয়া হয়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আপনারা হীরক রাজার দেশ সিনেমাটা দেখেছেন? মাঝেমধ্যে এগুলো দেখতে হবে। সরকার গোটা দেশকে এখন নির্যাতনের কারখানা বানিয়েছে। এগুলো হীরক রাজা তার দেশে এমন করেছিল। একদিন সবাই ক্ষেপে উঠেছিল। সে যখন তার একটি মূর্তির উদ্বোধন করতে যায় তখন লোকজন দড়ি ধরে বলে উঠেছিল দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান। এদের খান খান করে দিতে হবে। তক্তে তাউস ভেঙে ফেলতে হবে।

দ্রবমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, শুধু চাল-ডালের দাম কমালেই হবে না। আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে চলতে দিতে হবে। প্রশাসনকে জনগণের সেবক হতে হবে।

অবিলম্বে সরকারকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনে বাধ্য করতে হবে। এটাই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।

এদিকে দুপুরে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দুই ছাত্রদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ভীতিকর নৈরাজ্যের অন্ধকারে বাংলাদেশ ডুবে আছে। সরকার জবাবদিহি অদৃশ্য করেছে লুটপাটের রাজত্বকে নিষ্কণ্টক করার জন্য। অনাচার-অবিচারের এক মধ্যযুগীয় বর্বর শাসনের মধ্যে দেশের জনগণ রুদ্ধশ্বাস অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। এক ভীতিকর নৈরাজ্যের অন্ধকারে ডুবে গেছে দেশ।

ফখরুল আরো বলেছেন, বর্তমান সরকার ও তাদের পেটোয়া বাহিনী থেকে কেউ নিরাপদ নয়। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা অনিশ্চিত। দেশজুড়েই চলছে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব। বিরোধী দলসহ ভিন্নমতের মানুষদের কন্ঠরোধ করার জন্য সারা দেশে এরা গড়ে তুলেছে রক্তাক্ত সন্ত্রাসী পরিকাঠামো। এদের দ্বারা জনপদের পর জনপদে রক্ত ঝরছে, অত্যাচারিত হচ্ছে বিরোধী পক্ষের মানুষসহ সাধারণ জনগণ। জনগণের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় থাকার জন্যই এদের বিকৃত ক্ষমতাক্ষুধায় দেশে বিরাজ করছে এক ভীতির পরিবেশ।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সরাফত আলী সফু, আজীজুল বারী হেলাল, আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।