সন্ধ্যা ৬:২৮, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
স্বাধীনমত ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০-দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আজ সোমবার মিশরের শারম এল-শেখ রিসোর্টে ইসরায়েলি এবং হামাস প্রতিনিধিদের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে। হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা খলিল আল-হায়া এই আলোচনায় হামাসের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কে এই হামাস নেতা?
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপ-প্রধান ৬৪ বছর বয়সী খলিল আল-হায়া এই আলোচনায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে কাতারের দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো এক ব্যর্থ ইসরায়েলি হামলায় তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান। এই হামলায় ছয়জন নিহত হলেও কোনো শীর্ষ হামাস নেতা মারা যাননি।
খলিলের জ্যেষ্ঠতা ও রাজনৈতিক প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় আল-হায়া বর্তমানে বিদেশে হামাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে আরব ও ইসলামি বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন।
আলোচনাটি এমন এক সময়ে শুরু হলো, যখন গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আক্রমণের দুই বছর পূর্তি হতে আর মাত্র এক দিন বাকি।
আলোচনার প্রথম ধাপে গাজায় যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হবে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুসারে, হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এখনও প্রায় ৪৮ জন জিম্মি গাজায় আটক আছেন বলে ধারণা করা হয়।
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার কয়েকটি মূল বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে এখনও গুরুতর মতপার্থক্য রয়েছে। হামাস জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের শর্তে আংশিকভাবে সম্মত হলেও, গাজা উপত্যকার সামরিকীকরণ এবং সেখানে একটি আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ দ্বারা শাসন পরিচালনার শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল জিম্মিদের মুক্তির জন্য পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে আগ্রহী হলেও, গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অবস্থান এখনও অস্পষ্ট।
আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত আছেন। এই আলোচনা কয়েক দিনের মধ্যে ফলাফল দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।