কাউকে রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রেফতার নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কাউকে রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রেফতার নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মকবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। কাউকে বিশেষ সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে না। রোববার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বকশিবাজারে কারা কনভেনশন সেন্টারে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। রাজনৈতিকভাবে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না বা কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, নিউমার্কেটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুটো খুনের মামলা হয়েছে। ভাঙচুরের মামলা হয়েছে। এগুলোতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হয় না। তাই প্রমাণের ব্যাপার আছে, তদন্তের ব্যাপার আছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা কোনোদিনও ঘটনার সত্যতা না পেলে কাউকে গ্রেফতার করে না। ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামের যে দুই দোকানের কর্মচারীদের দ্বন্দ্ব থেকে গত সোমবার রাতে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত, সেই দোকান দুটি সিটি করপোরেশন থেকে মকবুলের নামে বরাদ্দ রয়েছে। তবে কোনো দোকানই মকবুল নিজে চালাতেন না। রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে ভাড়া দিয়েছেন দোকান দুটি। রফিকুল ও শহিদুল আবার পরস্পরের আত্মীয়। সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়াও সংঘর্ষের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী। নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা হয়েছে। দুই মামলাতে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়।
এছাড়াও সংঘর্ষে নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করেন। এই তিন মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় এক হাজার ৪০০ জনকে। তবে তিনটি মামলার মধ্যে শুধু একটিতেই এক বিএনপি নেতাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলাটির বাদী পুলিশ। ডেলিভ্যারিম্যান নাহিদ হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার তদন্তভার পেয়ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলার মধ্যে দুটি হত্যা মামলা। অন্য দুটি মামলা করেছে পুলিশ বাদী হয়ে। মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন, আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানি ফারুক, মিজান বেপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল। আসামিদের মধ্যে অ্যাডভোকেট মকবুল নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি, তিনি মামলায় এক নম্বর আসামি। তাকে আজ গ্রেফতার করলো ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

 

More News...

কুষ্টিয়ায় নকল আকিজ বিড়িসহ বিড়ি তৈরির উপকরণ জব্দ

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দুর্নীতি মামলা: স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এমডির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা