সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আয়ের সুযোগ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আয়ের সুযোগ

প্রযুক্তি ডেস্ক : বর্তমানে অনেকগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আয়ের ক্ষেত্র আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি নতুন একটি ওয়েবসাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক। বুলেটিন নামের ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লেখকেরা ফ্রি এবং পেইড নিউজ লেটার তৈরি ও শেয়ার করতে পারবেন। অর্থাৎ, এই প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমেও আয় করা যাবে।

বুলেটিনের লেখকদের সাবস্ক্রিপশন থেকে যে আয় আসবে তার পুরোটাই তিনি রাখতে পারবেন। নতুন এ ওয়েবসাইট সম্পর্কে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষ যেন জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সেই বিষয়টিতে সমর্থন দেওয়া।

সরাসরি ফেসবুক থেকেও আয়ের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন-টুইটার, ক্লাবহাউস, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, ইত্যাদি থেকেও আয় করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।

ইনস্টাগ্রাম
ইনস্টাগ্রামে অর্থ আয়ের বিষয়টি একটু অভিনব। ইনস্টাগ্রামের কনটেন্ট ক্রিয়েটররা আর্থিক সহায়তার অপশনটি দেখাতে চাইলে লাইভ ভিডিও চলাকালে ব্যাজ কিনতে পারবেন। অনুসারীরা সেই লাইভে প্রবেশ করা মাত্র আর্থিক সহায়তার অপশনটি দেখতে পাবেন এবং চাইলে যেকোনো পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে পারবেন।

টুইটার
টুইটারের টিপ জারের সাহায্যে অর্থ প্রেরণ ও গ্রহণ করা যায়। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোন উভয় ব্যবহারকারীই টিপ পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারবেন। ক্রিয়েটর, সাংবাদিক, বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও অলাভজনক সংস্থাগুলো এই ফিচার ব্যবহার করে অর্থ আয় করতে পারবে।

ক্লাবহাউস
‘ক্রিয়েটর ফার্স্ট’ প্রোগ্রামের সাহায্যে ব্যবহারকারীদের অর্থ আয়ের সুযোগ দেয় ক্লাবহাউস। একজন ক্রিয়েটর ক্লাবহাউস থেকে যে অর্থ আয় করেন তার পুরোটাই তাকে দিয়ে দেওয়া হয়।

স্ন্যাপচ্যাট
স্ন্যাপচ্যাটে দৈনিক যেসব কনটেন্ট তৈরি হয় সেগুলোর বিপরীতে ১ মিলিয়ন ডলার প্রদান করে প্রতিষ্ঠানটি। কোনো ব্যবহারকারীর কনটেন্ট স্ন্যাপচ্যাটের শর্ত পূরণে সক্ষম হলে এটি শেয়ার করা হয়। এর মানে হলো অন্য ব্যবহারকারীরা স্টোরি এবং সার্চ রেজাল্টস উভয় জায়গাতেই পাবে সেই স্ন্যাপ। এভাবে কারও স্ন্যাপ ভাইরাল হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর কাছে একটি নোটিফিকেশন যাবে এরকম-‘আপনি স্পটলাইট পেআউট’ গ্রহণের যোগ্য। তখন তিনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবেন।

টিকটক
টিকটকের ক্রিয়েটরদের কাজের জন্য তাদের সমর্থন ও পুরস্কার দেয় টিকটক কর্তৃপক্ষ। টিকটকের দেওয়া পুরস্কার পেতে চাইলে নির্ধারিত কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এসব শর্তের মধ্যে আছে-সর্বনিম্ন ১০ হাজার প্রকৃত অনুসারী থাকতে হবে। পাশাপাশি সর্বশেষ ৩০ দিনে থাকতে হবে এক লাখ প্রকৃত ভিডিও ভিউ। শর্তগুলো পূরণ হলে নির্দিষ্ট কিছু দেশের টিকটক ব্যবহারকারীরা সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ইউটিউব
ইউটিউব শর্টস কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য ১০ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করেছে। ‘শর্টস’ নির্মাতাদের প্রতি মাসে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত দেবে ইউটিউব। এই অর্থ ২০২১ ও ২০২২ সালে বিতরণ করা হবে। ইউনিক ইউটিউব শর্টস কনটেন্ট নির্মাতারা এখান থেকে অর্থ পেতে পারেন।

ইউটিউব শর্টস নির্মাতাদের তৈরি ‘শর্টস’ ভিডিওগুলো, প্রতি মাসে কত জন মানুষ ওই ভিডিওগুলো বানাচ্ছেন, কতজন দেখেছেন, এবং নির্মাতার দর্শকদের ভৌগোলিক অবস্থানের বিবেচনায় নির্ধারণ করা হবে নির্মাতাদের কে কত পাবেন। এ ছাড়া একদম নতুন ভিডিও হতে হবে ওই ‘শর্টস’গুলোকে। পুরোনো ভিডিওগুলো নতুন করে আপলোড করলে, অথবা টিকটকের মতো অন্য প্ল্যাটফর্মের জলছাপ আছে এমন কোনো ভিডিও পোস্ট করলে তার বিপরীতে আয় হবে না নির্মাতাদের।

এ ছাড়া ইউটিউবে দীর্ঘ ভিডিও থেকেও আয় করতে পারবেন ক্রিয়েটররা। এখান থেকে আপনি কী পরিমাণ আয় করবেন তা নির্ভর করবে আপনার সাবস্ক্রাইবার কেমন আছে এবং ভিডিওর কেমন ভিউ হচ্ছে তার ওপর। ইউটিউবে সর্বশেষ ১২ মাসে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং ৪ হাজার পাবলিক ওয়াচ আওয়ার সম্পন্ন হলে আপনি আয় শুরু করতে পারবেন। এ ছাড়া ইউটিউবে সুপার চ্যাটের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। কোনো ব্যক্তি বা তারকার ফ্যান, সাবস্ক্রাইবার বেড়ে গেলে তিনি কখনো লাইভে এলে সেখানে প্রশ্নের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। ধরা যাক, কোনো তারকা লাইভে এলেন। তখন অনেকই তাকে প্রশ্ন করেন। ওই তারকার পক্ষে সবার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় না। তখন যিনি প্রশ্ন করতে চান তিনি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন করতে পারবেন। এখান থেকে ওই তারকা বা বিখ্যাত ব্যক্তি আয় করতে পারবেন।

ফেসবুক
ফেসবুকে অর্থ উপার্জনের জন্য আপনার পাবলিক পেজ প্রয়োজন হবে। আপনার ফেসবুক পেজ অ্যাড ব্রেকের আওতায় আসলে আপনি ফেসবুক থেকে বিজ্ঞাপনের আয়ের অর্থের শেয়ার পাবেন। এ জন্য আপনার ফেসবুক পেজটি মনেটাইজেশন হতে হবে।

আপনার ফেসবুক পেজটি মনেটাইজেশন হওয়ার জন্য কিছু বিষয় অনুসরণ করতে হবে। গত ৬০ দিনে আপনার ফেসবুক পেজটিতে নিচের যেকোনো একটি বিষয় বাস্তবায়ন হতে হবে। আপনার ৩ মিনিট প্লাস ভিডিওতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভিউ হতে হবে। এই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভিউ হচ্ছে এ ধরনের ভিডিওকে অন্তত ১ মিনিট দেখা হতে হবে এবং এ রকম ১ মিনিট দেখার পরিমাণ হতে হবে ৩০ হাজার অথবা আপনার ফেসবুক পেজে ১৫০০০ এনগেজমেন্ট হতে হবে। অথবা আপনার ফেসবুক পেজে আপলোড করা সকল ভিডিও মিলিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার মিনিট ভিউ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে কমপক্ষে ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।

এ ছাড়াও আপনার ফেসবুক পেজে কমপক্ষে ১০ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে। কিছু কিছু জায়গায় এই ফলোয়ার ১ হাজার হলেও চলবে। আপনার কনটেন্টটি আপনার বিজনেস পেজ তথা ফেসবুক পেজে আপ করতে হবে। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে আপ করা কনটেন্টের জন্য ফেসবুক আপনাকে কোনো অর্থ দেবে না।

More News...

কল ধরলেই তথ্য হ্যাক, বিষয়টি সঠিক নয়

ঘোষণায় সীমাবদ্ধ অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন বন্ধের ‘তোড়জোড়’