রূপগঞ্জে কারখানায় আগুন : ডিএনএ পরীক্ষায় ৪৮ লাশের পরিচয় শনাক্ত

রূপগঞ্জে কারখানায় আগুন : ডিএনএ পরীক্ষায় ৪৮ লাশের পরিচয় শনাক্ত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ৪৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক শাখা। ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী আগামী সপ্তাহে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডির ফরেনসিক শাখার এক কর্মকর্তা জানান, আগুনে পোড়া ৪৮টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে ৬৬ জন স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলে অধিকাংশ লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। অন্য কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

গত ৮ জুলাই রূপগঞ্জের হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। নিহত তিন ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় তখনই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। বাকি লাশগুলো আগুনে এতটাই পুড়ে যায় যে দেখে চেনা বা শনাক্ত করার উপায় ছিল না। পরিচয় শনাক্ত না হওয়া লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘আমরা লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। আশা করছি, কোন লাশটা কার, সেই পরিচয়সহ প্রতিবেদন আগামী সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করতে পারব।’

লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় পরিচয় শনাক্ত হলে সিআইডি তাঁদের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে। এরপর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিহত ব্যক্তির পরিবারের কাছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। লাশ দাফনের জন্য নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

হাসেম ফুডের কারখানায় আগুনে পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে কারখানার মালিক আবুল হাসেম, তাঁর চার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গত ১০ জুলাই আবুল হাসেম, তাঁর চার ছেলেসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হাসেম ও তাঁর চার ছেলে জামিনে মুক্তি পান। হাসেম ফুডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, উপমহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বর্তমানে কারাগারে।

এদিকে গত ১৫ জুলাই মামলার তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। আট আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৮ জুলাই আদালতে আবেদন জানায় সিআইডি। ৮ আগস্ট আদালত রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।

তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আতাউর রহমান বলেন, এই মামলার প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার পাঁচজন জামিনে আছেন। প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তদন্তে অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, তদন্তে এখনো তাঁরা বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করছেন। ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামতসহ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাঁরা তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্য একেকটি বিষয় ভাগ করে তদন্তের বিষয়টি দেখছেন। তিনি আশা করছেন, এই পাঁচ সদস্য আগামী সপ্তাহে একসঙ্গে বসলে তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাবে। প্রথম আলো

More News...

১৭৩ জন বাংলাদেশী মিয়ানমার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান