ড্রাগন ম্যানের সন্ধান!

ড্রাগন ম্যানের সন্ধান!
অন্যান্য প্রতিবেদক : নতুন এক মানব প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ড্রাগন ম্যান। ধারণা করা হচ্ছে দেড় লাখ বছর পূর্বে এই প্রজাতির মানবের অস্তিত্ব ছিলো বিশ্বে।

চীনা গবেষকরা সম্প্রতি এই ড্রাগন ম্যানের মাথার খুলি উদ্ধার করেছেন। বিজ্ঞানীদের এই দলটি দাবি করছেন, মানব বিবর্তন প্রক্রিয়ায় নিয়েন্ডারথাল এবং হোমো ইরেকটাসের মতো এই প্রজাতির মানব মানুষের সবচেয়ে নিকটতম আত্মীয়।

‘দ্য ইনোভেশন’ নামের একটি জার্নালে সম্প্রতি মাথার এই খুলি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে। মানব বিবর্তনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যে শীর্ষস্থানীয় একজন বিজ্ঞানী ও গবেষক, লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের প্রফেসর ক্রিস স্ট্রিঙ্গার এই গবেষণা দলের একজন সদস্য ছিলেন।

তার মতে, বিগত সহস্রাব্দগুলোতে যেসব জীবাশ্ম পাওয়া গেছে,; তার মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার। এই আবিষ্কারের ফলে মানব বিবর্তনের ইতিহাস নতুন করে লিখতে হতে পারে। তাদের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এই প্রজাতির মানব নিয়েন্ডারথালের চেয়েও হোমো স্যাপিয়েন্সের অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ।

গবেষকরা বলছেন, এই নতুন প্রজাতির মানব হচ্ছে হোমো লোঙ্গি। এই লোঙ্গি শব্দটি এসেছে চীনা শব্দ লং থেকে যার অর্থ ড্রাগন। চায়নিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস এবং শিজিয়াঝুয়াঙ প্রদেশে হেবেই জিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিজুন নি বলেন, এই আবিষ্কারের মাধ্যমে বহু আগে হারিয়ে যাওয়া এক বংশধরকে আমরা খুঁজে পেয়েছি।

jagonews24

দেড় লাখ বছর পুরোনো হলেও এই মাথার খুলি আজও ভালোভাবে সংরক্ষিত আছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানব প্রজাতির মাথার খুলির সঙ্গে তুলনা করলে এই খুলিটি আকারে বেশ বড়। তবে মস্তিষ্কের আকার প্রায় একই ধরনের। বলা হচ্ছে, এই খুলিটি প্রাপ্তবয়স্ক এক পুরুষের। খুলি দেখে স্পষ্টত যে, ড্রাগন ম্যানের চোখের কোটর বিশাল ও চতুর্ভুজ আকৃতির। তার ভ্রু’র খাঁজ বিশাল আকারের, প্রশস্ত মুখ এবং বড় আকারের দাঁত।

বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, ড্রাগন ম্যান ছিল খুব শক্ত সামর্থ্য মানুষ। তবে তাদের বসবাস কেমন ছিলো সে বিষয়ে খুব কমই জানা গেছে। কারণ যে এলাকায় এই খুলিটি পাওয়া গিয়েছিল, সেখান থেকে এটিকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। তাই সেখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক দিক সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

নতুন প্রজাতির মানবের এই খুলিটি পাওয়া যায় ১৯৩৩ সালে। একজন চীনা নির্মাণ শ্রমিক এর সন্ধান পান। যে সময় এই খুলিটি পাওয়া যায় সে সময়ে এই শহরটি ছিল জাপানের অধীনে। ওই শ্রমিক মনে করেন, এই খুলির সাংস্কৃতিক মূল্য অনেক। এ কারণে তিনি এটিকে লুকিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান। কারণ তিনি চাননি এই খুলিটি যেন জাপানিদের হাতে না চলে যায়।

নিজের বাড়ির কূপের একেবারে তলায় তিনি খুলিটি লুকিয়ে রাখেন ৮০ বছর। তিনি মারা যাওয়ার আগে খুলির বিষয়ে পরিবারকে জানান। পরে তাদের মাধ্যমেই এটি বিজ্ঞানীদের হাতে এসে পৌঁছায়। এর আগেও চীনে প্রাচীনকালের আরো কিছু মানব দেহাবশেষের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ড্রাগন ম্যানের খুলিই সবশেষ আবিষ্কার।

More News...

বিনামূল্যে চিকিৎসা মেলে ‘ফ্রি স্ট্রোক ক্লিনিকে’

বিয়ে করতে এনে প্রেমিকাকে যৌনপল্লীতে বিক্রি করলেন প্রেমিক