নাইম শেখের তাণ্ডবে নাটকীয় জয় আবাহনীর

নাইম শেখের তাণ্ডবে নাটকীয় জয় আবাহনীর
স্পোর্টস ডেস্ক : লক্ষ্য ১৬৪ রানের। সেটাও আবার করতে হবে ১৮ ওভারে। আবাহনীর সামনে ছিল কঠিন সমীকরণ। ১৩ ওভার পেরোতেই ১১৩ রানের মধ্যে শীর্ষ ৫ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে হারের চিন্তায়ই পড়ে গিয়েছিল মুশফিকুর রহীমের দল।

২৯ বলে দরকার ৫১ রান। এতগুলো উইকেট হারিয়ে ফেলার পর বলতে গেলে প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছিল। কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করলেন নাইম শেখ। ওপেনিংয়ে খেলে অভ্যস্ত এই বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ছয় নম্বরে নেমে নাটকীয় এক জয় এনে দিলেন আবাহনীকে।

নাইম শেখকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শেষ তিন ওভারে আবাহনীর দরকার ছিল ৩৮ রান। মোহাম্মদ শহীদের করা ১৬তম ওভারে নাইমের এক ছক্কা আর সাইফউদ্দিনের এক বাউন্ডারিতে ১৬ রান তুলে নেয় তারা। ওই ওভারেই বলতে গেলে ম্যাচ ঘুরে যায়।

পরের ওভারে মুক্তার আলিকেও একটি বাউন্ডারি হাঁকান নাইম, সঙ্গে দুই সিঙ্গেলস নিয়ে ওভার থেকে তুলেন ১২ রান। মার খাওয়া শহীদকেই শেষ ওভারে আবার নিয়ে আসেন রূপগঞ্জ অধিনায়ক মোহাম্মদ নাঈম।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১০ রান। প্রথম বলে সাইফউদ্দিন সিঙ্গেলস নিয়ে দেন নাইম। পরের বলে নাইম নেন দুই রান। তৃতীয় বলে ডিপ এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে বড় এক ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচটা বের করে নেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। চতুর্থ বলে এক রান নিয়ে নিশ্চিত করেন জয়।

এতে ১১ ম্যাচে ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে উঠে এসেছে আবাহনী। সমান ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে প্রাইম ব্যাংক, ১৬ পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে এগিয়ে থাকায় দুই নম্বরে প্রাইম দোলেশ্বর।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ করেছিল ৫ উইকেটে ১৬২। টার্গেট হওয়ার কথা ছিল ১৬৩ রানের। কিন্তু যেহেতু রূপগঞ্জের ইনিংসে ৬ ওভার শেষে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে ম্যাচ ২০ ওভারের বদলে ১৮ ওভারে নেমে আসে, তাই ডাকওয়ার্থ লুইসে আবাহনীর টার্গেট বেড়ে দাঁড়ায় ১৬৪ রানের।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ছিল আবাহনী। তবে তাদের ব্যাটসম্যানরা ইনিংসে থিতু হয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। নাজমুল হোসান শান্ত আর মুনিম শাহরিয়ারের ২৬ বলের ওপেনিং জুটিতে আসে ৩৫ রান।

১৬ বলে ২২ রান করা মুনিম রূপগঞ্জের বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদের বলে সুইপ করেছিলেন। ডিপ মিডউইকেটে সীমানার কাছে মুক্তার আলীর হাতে হন ক্যাচ।

jagonews24

এরপর ছোটখাটো ঝড় তুলে ফেরেন শান্তও (১৯ বলে এক চার, ২ ছক্কায় ২৯)। মোহাম্মদ শহীদের বলে ফুল ব্লাডেড স্ট্রেইট ড্রাইভ করেছিলেন এ বাঁহাতি ওপেনার। পেট আর বুকের মাঝামাঝি উচ্চতায় আসা সে বল ধরে ফেলেন শহীদ নিজেই।

সেট হয়ে আউট হয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম আর আফিফ হোসেন ধ্রুবও। ১৮ বলে ২০ করে মুশফিক রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে পড়েছেন লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে।

এ নিয়ে টানা দুইদিন একই শট খেলতে গিয়ে আউট হলেন আবাহনী অধিনায়ক। আগের দিন প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে অফস্পিনার শামিম পাটোয়ারীর বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। আজ রূপগঞ্জ স্পিনার সানজামুল ইসলাম নয়নের উইকেট সোজা বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে লেগবিফোর উইকেট হলেন তিনি।

আফিফ শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত। কিন্তু ১২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২১ রান করে মুক্তার আলিকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়েছে অফসাইডে। লং অফ থেকে সামনে দৌড়ে সাব্বির রহমান ক্যাচটি তালুবন্দী করেন।

আর মোসাদ্দেক (১১ বলে ১৫) দারুণ ক্যাচ উইকেটকিপার জাকের আলীর। ব্যাট হাতে ফিফটির পর পেসার শহীদের বলে প্রায় প্রথম স্লিপে মাটিতে শরীর ফেলে নিচু ক্যাচ ধরেন জাকের। মোসাদ্দেক অফস্ট্যাম্পের বাইরে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন। বল তার ব্যাটের বাইরে লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে।

সেখান থেকে নাইম আর সাইফউদ্দিনের অসাধারণ জুটি। হারতে বসা এক ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এই যুগল।

এর আগে জাকের আলির ফিফটি (৪২ বলে ৫২), সাব্বির রহমানের ২৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংস আর শেষদিকে আল আমিন জুনিয়রের ১৪ বলে ২৬ রানের ক্যামিওতে ৫ উইকেটে ১৬২ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

More News...

সল্টের ‘কালবৈশাখী ঝড়ে’ নববর্ষ বরণ কলকাতার

নেইমার পেলেন বড় সুখবর