আসলাম চৌধুরীর রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর

আসলাম চৌধুরীর রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানার নাশকতা মামলায় কারাবন্দি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর রিমান্ড ও জামিন আবেদন খারিজ করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আকবরশাহ থানার একটি নাশকতার মামলায় সিআইডি আসলাম চৌধুরীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেছিলো। অন্যদিকে আসামিপক্ষ তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে রিমান্ড ও জামিন দুটি আবেদনই নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ৭ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার ভার্চুয়াল আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে সিআইডি। আদালত তখন ১০ জুন রিমান্ড আবেদনের জন্য শুনানির দিন ধার্য করে। এছাড়া গত ৬ জুন সিআইডি ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার দায়ের করা এক মামলায় আসলাম চৌধুরীকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন করে। আদালত তাকে সেই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর আদেশ দেয়।

এছাড়া রোববার নাশকতা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানার দুই মামলায় আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সেই আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলে ২০ জুন পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত। এই দুই মামলায় গত ৩০ মে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ নিয়মিত বেঞ্চ খোলা পর্যন্ত জামিন দেন। এ জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

অন্য মামলায় ২০১৬ সাল থেকে আসলাম চৌধুরী কারাগারে আছেন। নাশকতার অভিযোগে ২০১৩ সালে করা ওই দুই মামলায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে আসলাম চৌধুরীকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামসহ সমমনা ১২ ইসলামী দল হরতাল ডাকে। এর সমর্থনে ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে কোতয়ালি থানাধীন বাবুবাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে মিছিল বের করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। বাবুবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পুলিশের সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়ায়। সে সময় ‘দুর্বৃত্তরা’ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। কোতয়ালি থানার এস আই এরশাদ হোসেনের দায়ের করা ওই মামলায় ১০১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়।

এরপর ২০১৬ সালের ১৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরী ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. আসাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর)। পরে তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন ১৬ মে ৫৪ ধারায় (মোসাদ কানেকশনে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহ) গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের দুইজনের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর ২০১৬ সালের ২৬ মে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়ের রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা হয়। দণ্ডবিধির ১২০ (বি), ১২১ (৩) ও ১২৪ (এ) ধারায় ডিবির ইন্সপেক্টর গোলাম রাব্বানী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে ওই মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন।

এছাড়া ভারতে গিয়ে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক কর্মকর্তার সঙ্গে ‘সরকার উৎখাতের’ জন্য আলোচনা করার অভিযোগ রয়েছে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে দিল্লি ও আগ্রার তাজমহল এলাকায় ইসরায়েলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রধান লিকুদপার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা-সাক্ষাতের বেশ কিছু ছবি প্রকাশিত হলে দেশ-বিদেশে তোলপাড় হয়।

More News...

ওবায়দুল কাদেরের মস্তিষ্ক অলস-হৃদয় দুর্বল : রিজভী

বিএনপি বাঙালি সংস্কৃতিকে সহ্য করতে পারে না: কাদের