কুড়িগ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধ ও পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

কুড়িগ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধ ও পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং-মার্চ দিবস স্মরণে রবিবার (১৬ মে) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজলায় দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন রোধ, নদী তীর রক্ষা ও পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের দাবীতে দুধকুমার নদী তীরে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের সহযোগিতায় মাওলানা ভাসানী পরিষদ, মাওলানা ভাসানী কৃষক সমিতি ও মাওলানা ভাসানী স্মৃতি সেবা সংঘ-এর যৌথ আয়োজনে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নে দুধকুমার নদীর ভাঙ্গনকবলিত বাগবাড়ী (গফুরের ঘাট) এলাকায় এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নদী ভাঙ্গনের শিকার কয়েকশত মানুষ ভুরুঙ্গামারীর ভাসানীবাড়ী থেকে তিলাই ইউনিয়নের বাগবাড়ী (গফুরের ঘাট) পর্যন্ত প্রতীকী লং-মার্চ পালন করেন এবং গফুরের ঘাটে মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন।
দিবসটি স্মরণ ও দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন রোধকল্পে মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা দেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন রোধ ও নদী তীর রক্ষার স্থায়ী সমাধান, তিস্তা প্রকল্পের অনুরূপ ‘দুধকুমার নদী প্রকল্প’ গ্রহনের মাধ্যমে সোনাহাট স্থলবন্দরকেন্দ্রিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জোর দাবী জানান।
ভাসানী পরিষদের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সভাপতি ইউনুস আলী সবুজের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ভাসানী পরিষদের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা লিডার ড. শফিকুল ইসলাম কানু।
কানু বলেন- মজলুম জননেতার দেখানো পথ ধরে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায় আজ সময়ের দাবী। এই দাবী আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে।
সমাবেশের মুখ্য আলোচক মাওলানা ভাসানী কৃষক সমিতির সভাপতি ও ভাসানী পরিষদের সদস্য-সচিব আজাদ খান ভাসানী বলেন, ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায়ের মাধ্যমে আমাদের জীব-বৈচিত্র রক্ষা ও অর্থনীতির জন্য টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সোনাহাট স্থলবন্দর সম্প্রসারণ করে দুধকুমার নদীর বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন তিলাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন শিকদার, ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম, মওলানা ভাসানী স্মৃতি সেবা সংঘের সভাপতি মনিরুজ্জামান খান ভাসানী, বাংলাদেশ কৃষক মজুর সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোকাদ্দেস হোসেন শিকদার, দীপক কুমার রায়, হাফিজুর রহমান খান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর উজানে ভারত সরকার কর্তৃক অবেধভাবে ফারাক্কা বাঁধ তৈরির প্রতিবাদে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী মাদ্রাসা ময়দান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট পর্যন্ত প্রায় ৬৪ মাইলব্যাপী ফারাক্কা লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ফারাক্কার প্রাণঘাতি ব্যারাজ ধ্বংস করে দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের দুই পাশের মানুষ, পশু-পাখি, জীব-অনুজীব অর্থাৎ দৃশ্যমান বা দৃশ্যের বাইরে থাকা সকল প্রাণের রক্ষা এবং তাদের হেফাজত নিশ্চিত করার জন্য এক মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাওলানা ভাসানী, যা ফারাক্কা লং-মার্চ নামে পরিচিত।

More News...

১৭৩ জন বাংলাদেশী মিয়ানমার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান