রাত ১০:৪৪, ৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের জন্য রাশিয়া তার মূল শর্তগুলো থেকে সরে আসবে না। রোববার রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আরআইএ নোভোস্তিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত হিসেবে বিবেচিত ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্নভাবে প্রচেষ্টা চালালেও এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। গত মাসে হঠাৎ করেই হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত শীর্ষ বৈঠক বাতিল করেন ট্রাম্প।
বৈঠকের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে পশ্চিমা বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর শুক্রবার নাকচ করে দিয়েছে ক্রেমলিন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, ইউক্রেন ইস্যুতে মস্কো তার দাবি থেকে পিছু হটতে প্রস্তুত নয়।
২০০৪ সাল থেকে পুতিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ল্যাভরভ বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং আমি নিয়মিত যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা বুঝি।
তিনি বলেন, ইউক্রেন ইস্যু এবং দ্বিপাক্ষিক এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই আমরা টেলিফোনে যোগাযোগ রাখি এবং প্রয়োজনে মুখোমুখি বৈঠক করতেও প্রস্তুত।
ইউক্রেনে সৈন্য মোতায়েনের প্রায় চার বছর পরও রুশ বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে এবং বর্তমানে তারা ইউক্রেনের প্রায় ১৯ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। মস্কো বলছে, এই এলাকা আইনিভাবে রাশিয়ার অংশ। তবে ইউক্রেন এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো বলেছে, তারা কখনোই এ দাবির স্বীকৃতি দেবে না।
ল্যাভরভ বলেন, গত ১৫ আগস্ট আলাস্কার আঙ্কোরেজের একটি সামরিক ঘাঁটিতে পুতিন ও ট্রাম্পের বৈঠকে যেসব ‘বোঝাপড়া’ হয়েছিল, তা পুতিনের ২০২৪ সালের জুন মাসের দাবি এবং ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গঠিত।
২০২৪ সালের জুনে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। যার মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা ত্যাগ এবং মস্কো যে চারটি প্রদেশকে রাশিয়ার অংশ দাবি করে (পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক—যা মিলে দোনবাস অঞ্চল এবং দক্ষিণের খেরসন ও জাপোরিঝিয়া), সেখান থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্য প্রত্যাহার করা।
বর্তমানে রাশিয়া ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া, প্রায় পুরো লুহানস্ক, দোনেৎস্কের ৮০ শতাংশ, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার ৭৫ শতাংশ এবং খারকিভ, সুমি, মিকোলাইভ ও দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, রাশিয়ার দখলে থাকা কিছু এলাকা ডি ফ্যাক্টো হিসেবে স্বীকৃত হতে পারে, কিন্তু আইনগতভাবে নয়। তিনি বলেন, তার ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো অধিকার নেই। আর এমন পদক্ষেপ ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের নতুন রুশ হামলার ঝুঁকিতে ফেলবে। সূত্র: রয়টার্স।