নিহতদের ৯৫ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা ব্যবহারকারী

নিহতদের ৯৫ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা ব্যবহারকারী

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) আওতাধীন এলাকায় ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ দায়ী ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা ব্যবহারকারীরা তথা পথচারী, মোটরসাইকেল চালক এবং সাইকেল চালক। জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিটের সহযোগী বৈজ্ঞানিক ডা. শিরিন ওয়াধানিয়ার গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১২ জুলাই) চসিক কনফারেন্স রুমে আয়োজিত রোডসাইড অবজারভেশনাল স্টাডির ফলাফলে জানানো হয়, ২০২১ সালে চসিক এলাকায় ৯৫ জন নিহতের মধ্যে ৮২ শতাংশই ছিলেন পথচারী। আর ১১ শতাংশ মোটরসাইকেলচালক, ২ শতাংশ সাইকেল আরোহী এবং বাকী ৫ শতাংশ অন্যান্য যানবাহন ব্যবহারকারী।

সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) সহায়তায় চসিক এবং জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার অন্যতম শর্ত সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আর সড়ক-সংঘর্ষ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দুর্ঘটনার সঠিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা এসব তথ্য-উপাত্ত যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারবে।

 

তিনি সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চসিকের গৃহীত উদ্যোগসমূহ ও চলমান কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেন। বিআইজিআরএস এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে চসিক সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামের সড়ককে নিরাপদ ও সচল রাখতে সচেষ্ট রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। তবে, ট্রাফিক বিভাগের একার পক্ষে নিরাপদ সড়ক গড়া সম্ভব নয়। পুলিশের পাশাপাশি সকল অংশীজনকে নিয়ে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

গবেষক ডা. শিরিন ওয়াধানিয়া জানান, ২০২১ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ দায়ী তিনটি শ্রেণী, যাদের গবেষণায় ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা ব্যবহারকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরা হলেন পথচারী, মোটরসাইকেল চালক এবং সাইকেল চালক। গবেষণামতে শতকরা ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে যানবাহনগুলো গতিসীমা অতিক্রম করে আর গতিসীমা অতিক্রম করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি ৪৮ শতাংশ হারে দেখা যায় বাসের ক্ষেত্রে। মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে যথাযথ নিয়মে হেলমেট ব্যবহারের হার মাত্র ৬৮ শতাংশ এবং আরোহীদের মধ্যে যথাযথ নিয়মে হেলমেট ব্যবহারের হার মাত্র ২০ শতাংশ।

তিনি আরও জানান, যানবাহন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সিটবেল্ট ব্যবহারের হার মাত্র ১৫ শতাংশ। এছাড়া যাত্রী ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত যানবাহন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সিটবেল্ট ব্যবহারের প্রবণতা নেই বললেই চলে। ভারী যানবাহনের চালকদের ক্ষেত্রে সিটবেল্ট ব্যবহারের হার মাত্র ৩ শতাংশ। যানবাহনে যাতায়াতকারী শিশুদের মধ্যে কাউকেই চাইল্ড-সিট তথা চাইল্ড-রেস্ট্রিয়েন্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিআইপিআরবির রোড সেফটি প্রজেক্টের ম্যানেজার কাজী বুরহান উদ্দিন। অনুষ্ঠানে বিআরটিএ, ফায়ার ব্রিগেড, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি এবং বিআইজিআরএসের অংশীদার সংস্থার প্রতিনিধিরা এবং সুশীল সমাজের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

More News...

কুষ্টিয়ায় নকল আকিজ বিড়িসহ বিড়ি তৈরির উপকরণ জব্দ

মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের র‌্যালি ও সমাবেশ