মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকার এলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকার এলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আবার কোনো গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় বসলে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক শোলে। তিনি বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত এ জনগোষ্ঠীর (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।’

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক শোলের নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। এ সময় মার্কিন এ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এ কথা বলেন। একই সঙ্গে মানবিক কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

সাক্ষাৎকালে ডেরেক শোলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কিছু উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তার সফর দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বের প্রতিফলন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’

এসময় রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তারা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মাদকপাচার, মানবপাচার, সন্ত্রাসবাদ ও আন্তঃসহিংসতার মতো নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের কারণে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ ও স্থানীয়দের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে। তাই এখন তাদের সেখানে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘সরকার ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে আয়সংস্থানমূলক কাজসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। আমরা কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি।’ এসময় ভাসানচরে সহায়তা দেওয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও অনুকূল পরিবেশে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

সাক্ষাৎকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস প্রমুখ।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক শোলে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সফরে আসেন। সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। ২৪ ঘণ্টার সফর শেষে বুধবার রাতে বাংলাদেশ ছাড়বেন ডেরেক শোলে।

More News...

মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের র‌্যালি ও সমাবেশ

র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত