জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন খুনি ও বিশ্বাসঘাতক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী

জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন খুনি ও বিশ্বাসঘাতক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান একজন খুনি ও বিশ্বাসঘাতক ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতারা ক্রমাগত বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে অস্বীকার করে আসছে। তারা একজন খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা চালান। জিয়াউর রহমান ছিলেন কার্যত একজন খুনি ও বিশ্বাসঘাতক। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন। এই খুনির দলের রাজনীতি যারা করেন তারা বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে অস্বীকার করে।’

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

বিএনপি নেতাদের খুনি এবং বিশ্বাসঘাতকের রাজনীতি ছাড়ার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির সামনে জিয়াউর রহমানের মুখোশ উন্মোচন করা হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশে যদি সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা চালু করতে হয়, ইতিহাস ও রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে হয়, তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করা নিষিদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে যারা বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে খাটো করে দেখে এবং বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায় তাদেরও রাজনীতি এদেশে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। একজন খুনি এবং বিশ্বাসঘাতকের পক্ষে যারা রাজনীতি করেন তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়।’ হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে, যিনি ঘুমন্ত জাতিকে সশস্ত্র বাঙালি জাতিতে রূপান্তরিত করে বাঙালিদের জন্য প্রথমবারের মতো ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র রচনা করেছেন, সেই বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে অস্বীকার করা হয়, এটি পৃথিবীর কোন দেশে নাই।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ভারতে মহাত্মা গান্ধী, পাকিস্তানে কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং যুক্তরাষ্ট্রে জজ ওয়াশিংটনের ভূমিকাকে খাটো করে কেউ কি রাজনীতি করতে পারবে, পারবে না। কিন্তু আমাদের দেশে পারে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে এবং অনেক স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আগে আমরা বলতাম ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ রচনা করতে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে ইতিমধ্যে ক্ষুধাকে আমরা জয় করেছি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত দেড় বছর করোনাকালে বহু মাস-সপ্তাহ লকডাউন ছিল। করোনার শুরুতে কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী ও টকশোবিদ যারা রাত ১২টার পর টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন তাদের অনেকে শঙ্কা-আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, দেশে হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মরবে, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে। তাদের সেই আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেড় বছরে একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি, এই খেটে খাওয়া মানুষের দেশে।

তিনি বলেন, দেশে এখন কোন খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না, ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। আকাশ থেকে কুড়ে ঘর সহজে দেখা যায় না। এটিই হচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এটি কোন যাদুর কারণে হয়নি। শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণে এই পরিবর্তন হয়েছে, এটি অনেকের সহ্য হয় না।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি করোনার টিকা নিয়ে কত কুৎসা রটনা ও অপপ্রচার চালাল, পরে আবার নিজেরাই টিকা নিল। বিএনপির নেতারা টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতো কাজটাই করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন দেশের আশি শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। বিএনপি মনে করেছিল সরকার টিকা সংগ্রহ করতে পারবে না। গণটিকা কার্যক্রম যখন শুরু হয়েছে তখন তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫১ সালে কমরেড মণি সিংকে চিঠি লিখেছিলেন আমি পূর্ব বাংলার স্বাধীনতার পরিকল্পনা করছি, আপনারা আমার সঙ্গে থাকবেন কি না। এ নিয়ে তিনি কারাগারে বৈঠকও করেছেন। এটি কমরেড মণি সিংয়ের বক্তব্য। যা সেই সময়ে দৈনিক ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছাপানো হয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু বহু আগেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন কখন কোন কথাটি বলতে হয়, তিনি পরিকল্পনা করেছিলেন, প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কিন্তু তিনি সেটি প্রকাশ করেননি। বঙ্গবন্ধু স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনের মাধ্যমে ৬৬ সালে ছয় দফা ঘোষণা করলেন। ছয় দফার ভিত্তিতে জনমত গঠন করলেন। জনমত গঠন করে মানুষের মনন তৈরি করে তিনি নির্বাচনে গেলেন। নির্বাচনে গিয়ে তিনি প্রমাণ করলেন বাংলার মানুষ তার ছয় দফার পক্ষে আছে। এরপর ধীরে ধীরে বাঙালিকে আরো উদ্বেলিত করে ৭ মার্চ স্বাধীনতার ডাক দেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মহিউদ্দিন রাশেদ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবুল কাশেম চিশতি, নুরুল আনোয়ার চৌধুরী বাহার, ইঞ্জিনিয়ার মেজবাউল আলম লাভলু, ইঞ্জিনিয়ার মো. হারুন, প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, সদস্য ইফতেখার হোসেন বাবুল, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ প্রমুখ।

More News...

সোনার দাম আবার বাড়লো, ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা

ওবায়দুল কাদেরের মস্তিষ্ক অলস-হৃদয় দুর্বল : রিজভী