চার বছরে যক্ষ্মামুক্ত ৭ হাজার রোগী

চার বছরে যক্ষ্মামুক্ত ৭ হাজার রোগী

স্বাধীনমত ডেস্ক :  রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা আয়েশা বিনতে ইসলামের আট মাস আগে যক্ষ্মা শনাক্ত হয়। স্থানীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ সেন্টার থেকে পাওয়া বিনামূল্যের ওষুধ তিন মাস সেবন করেন। কিন্তু উপসর্গ কিছুটা কমে গেলে ওষুধ ছেড়ে দেন। গত মাসে আবার সমস্যা দেখা দিলে বেসরকারি হাসপাতালে যান এবং পরীক্ষায় যক্ষ্মা শনাক্ত হয়। এবার চিকিৎসক আয়েশার মোবাইলে ‘জানাও’ অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধনের মাধ্যমে তাঁর বিষয়ে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে (এনটিপি) অবহিত করেন। এরই মধ্যে এনটিপির আওতায় ওষুধ পেয়ে নিয়মিত সেবন করছেন আয়েশা। সব ঠিক থাকলে শিগগিরই তিনি যক্ষ্মামুক্ত হবেন। শুধু আশেয়া নন; গত চার বছরে ‘জানাও’ অ্যাপের মাধ্যমে অন্তত ৭ হাজার রোগী যক্ষ্মার চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ইউএসএআইডির সহায়তায় ২০১৮ সালে প্রস্তুত করা হয় অ্যাপটি। পরের বছর ৫০০ চিকিৎসক নিয়ে পাইলট আকারে অ্যাপটির ব্যবহার শুরু হয়। সাফল্য দেখে এক পর্যায়ে এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বর্তমানে রেজিস্টার্ড কোনো চিকিৎসক যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান পেলে তাঁকে এ অ্যাপে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানান, নিবন্ধনের পর সংশ্লিষ্ট রোগীর তথ্য বার্তা হিসেবে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ সেন্টারে যায়। এর পর সেন্টার থেকে ওই রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করে চিকিৎসা এবং ওষুধ সেবন শুরু করলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে বিষয়টি জানানো হয়।যক্ষ্মার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। ওষুধের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ওষুধ সেবন, নিয়মিত চিকিৎসক দেখানো ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয়। ওষুধ সেবন অনিয়মিত হলেই বিপদ। কোনো যক্ষ্মা রোগী নিয়মিত ওষুধ নিতে না এলেই জানাও অ্যাপটি জানিয়ে দেবে।

যদিও চিকিৎসকদের অনেকেই বলেছেন, অ্যাপটি বেশ কঠিন। অনেকে চাইলেও এখানে তথ্য দিতে পারেন না। ফলে জানাও অ্যাপ আরও সহজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা ।জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সাবেক লাইন ডিরেক্টর ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘যক্ষ্মা রোগীকে দীর্ঘ ছয় মাস নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়। সরকারি কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধিত রোগীকে নিয়মিত ওষুধ সেবনে সহায়তা করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে বেসরকারিতে এমন ব্যবস্থা না থাকায়, রোগী পেলেই তারা জানাও অ্যাপসের মাধ্যমে জাতীয় কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।’

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর মাহফুজুর রহমান সরকার বলেন, ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগী পেলে অ্যাপের মাধ্যমে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেন। আগে বিচ্ছিন্নভাবে কাজটি করা হলেও এখন সংগঠিতভাবে হওয়ায় এর সফলতা বাড়ছে। এমনকি নিকটবর্তী যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ সেন্টার থেকে রোগী বিনামূল্যে ওষুধ নিয়ে সেবন শুরু করলে ওই চিকিৎসককে আবার বিষয়টি জানানো হচ্ছে।

 

More News...

কোন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল?

সোনার দাম আবার বাড়লো, ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা