‘সাধারণ মানুষের নয়, আ.লীগ ও সরকারি কর্মচারীদের আয় বেড়েছে’

‘সাধারণ মানুষের নয়, আ.লীগ ও সরকারি কর্মচারীদের আয় বেড়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : সব জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুন বেড়ে গেছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই দিকে সরকারের নজর নেই। তারা বলে সবকিছু সহনশীল আছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, আয়ও বেড়েছে। কার আয় বেড়েছে? আওয়ামী লীগের আর সরকারি কর্মকর্তাদের আয় বেড়েছে। যারা চুরি করে, লুট করে মানুষেটা খায় তাদের বেড়েছে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল। সরকার বাংলাদেশের সমস্ত খাতগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কৃষিকে ধ্বংস করেছে, তাঁত শিল্প, হস্ত শিল্পকে ধ্বংস করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তখন দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি, আর এখন ১৬ কোটির বেশি। কিন্তু সাড়ে ৭ কোটির সময় দেশে খাদ্যের ঘাটতি ছিল। আর আজকে দেশে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। কাদের কারণে এটা হয়েছে? এই কৃষকদের কারণে এটা হয়েছে। কৃষকরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, রক্ত পানি করে এই ফসল ফলায়।

তিনি আরও বলেন, আজকে সরকার যে এতো বড়াই করে, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। কিন্তু এই কৃষকদের এখন শুধু সম্পূর্ণ অবেহলা করছে না, তাদের কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাদের মাথায় হাত, হঠাৎ করে প্রতি কেজি সারে ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেন সারের দাম বাড়িয়েছে, কারণ আইএমএফ শর্ত দিয়েছে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। সারা পৃথিবীতে কৃষিতে ভুর্তকি দেওয়া হয়। তারা ফসল ফলিয়ে আমাদের ভাত জোগায়। সেই কৃষকদের যদি ভর্তুকি না দেওয়া হয় তাহলে তারা ফসল ফলাতে পারবে না।

নিজের সুইজারল্যান্ডের সফরের অভিজ্ঞতা তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, সেখানে দেখলাম পাহাড়ে-পাহাড়ে ১০০-১৫০ গরু একসঙ্গে চরে। গরুগুলো যে দুধ হয়, তার জন্য খামার আছে, সেখানে তারা দুধ দিয়ে মাখন, বিস্কুট, চকলেট তৈরি করে। যেটা সারা পৃথিবীতে যায়। আমি সেখানকার কৃষককে জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা যে এগুলো তৈরি করে দাম ঠিক মতো পাও কি না? তারা বললো, দামের ওপর না, আমাদের সরকার টাকা দেয়। অর্থাৎ তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকার টাকা দেয়। তাদের ছেলে-মেয়েরা বিনা খরচে স্কুলে লেখাপড়া করে। তাদের সেইভাবে ভুর্তকি দেওয়া হয়, আর আমাদের দেশে কৃষকদের গলা টিপে ধরার জন্য প্রতি কেজি সারে ৫ টাকা দাম বাড়িয়েছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে শুধু কৃষিখাতে নয়, পোল্ট্রি খাত, গরুর খামারের ব্যবসায়ীরাও পথে বসে গেছে। শুধু বড়রা বড় হচ্ছে, আর যারা মাঝারি এবং ছোট তারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন, কয়েক হাজার পোল্ট্রি খামারি টিকে থাকতে পারছে না, কেন বড়-বড় পোল্ট্রি শিল্পগুলো দাম ঠিক করে ছোটদের টিকে থাকা সম্ভব নয়। অথচ, মুরগির, ডিমের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আসছে না, বাড়ছেই। অর্থাৎ যে উৎপাদন করে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তাকে বাদ দিয়ে শুধু বড়লোকদের জন্য, যাদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক আছে তাদের টিকে রাখার জন্য এই সরকার কাজ করছে। এই সরকার সাধারণ মানুষের নয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

More News...

সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির পরবর্তী হাতিয়ার ‘ফুল’

ডাব-শরবত খায় ‘সিংহরাজ’, ওজন ৩০ মণ