শিক্ষকেরা রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত, তারা ভালো করে পড়ান না : ড. জাফর ইকবাল

শিক্ষকেরা রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত, তারা ভালো করে পড়ান না : ড. জাফর ইকবাল

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তারা ভালো করে পড়ান না বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় লেখক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

তিনি বলেন, ‘কিছু শিক্ষক ঠিক করে পড়ায় না, শিক্ষকদের মাঝে ইন্টারনাল পলিটিকস আছে এই জিনিসটা আমি জানি। আমি এ বিষয়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময়ে এগুলোর বিরুদ্ধে আজীবন ফাইট করেছি। যাতে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থী বান্ধব হয়। এগুলো থাকবে, এ জন্য শিক্ষার্থীরা হাল ছেড়ে দেবে, এটা ঠিক না।’

বুধবার বিকেলে সম-সাময়িক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপকালে দৈনিক দেশ রূপান্তরকে এসব কথা বলেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের লিডারশিপ কোয়ালিটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী যে সাবজেক্টেই ভর্তি হোক না কেন, সে এখান থেকে পাস করার পর একজন লিডার হবে। সে যেখানেই যাবে সেখানেই লিড দেবে। যদি সে এটা না করে, তাহলে আমি মনে করি, সে তার কাজ করেনি। আমরা যা শিখিয়েছি, তা সে শেখেনি। তাকে শিখতে হবে, তার আগ্রহ থাকতে হবে।’

শিক্ষার্থীদের শিখন পদ্ধতি ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্লাস রুম থেকে যা শিখতে পারে তার চেয়ে বেশি শিখতে পারে শ্রেণি কক্ষের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছরের জীবনে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন তারা। আবার সে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার পথও খোঁজে বের করেন তারা। এ ছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সহ-শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডগুলো থেকে বেশি শিখতে পারেন আমাদের শিক্ষার্থীরা। এ শিক্ষার মাধ্যম তারা একজন প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠেন।’

শিক্ষার্থীদের ফেসবুক ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ কমে গিয়েছে। তারা ফেসবুকে বেশি সময় ব্যয় করছে। এটা শুধু বাংলাদেশে না, পুরো পৃথিবীর একটা বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, তারা যেন এটা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয়। শিক্ষার্থীদের ফেসবুকে কম সময় দিয়ে বই পড়ার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার ধারণা প্রথম নিয়ে আসেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা একবার পরীক্ষা দিয়ে ২০টা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করছে। এটা নিঃসন্দেহে শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের দুর্ভোগ লাঘব করেছে। প্রথমবারের মতো এই পরীক্ষা হওয়ায় ছোটখাটো কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে সামনে এগুলো থাকবে না বলে আশা করেন তিনি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকিছু আমার প্রিয়। দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কাটানো সময়গুলোকে মিস করি। আমি বর্তমানে অবসরে আছি। আমার অবসরকালীন সময় ভালোই কাটছে। আমি যেহেতু লেখালেখি করি এই দিকে বেশি সময় কেটে যায়।’

এদিকে, অবসর নেওয়ার প্রায় দুই বছর পর শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এত দিন পর ক্যাম্পাসে জনপ্রিয় এই অধ্যাপককে পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। অনেক শিক্ষার্থীকে তার সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা যায়।

More News...

র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া