চীনের কমিউনিস্ট নেতারা ‘সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বোঝেন না’: দালাই লামা

চীনের কমিউনিস্ট নেতারা ‘সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বোঝেন না’: দালাই লামা

অনলাইন ডেস্ক : তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা চীনের কমিউনিস্ট নেতাদের সমালোচনা করে বলেছেন যে, তারা ‘ভিন্ন সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বোঝেন না’। পাশাপাশি তিনি তাদের কমিউনিস্ট এবং মার্কসবাদী আদর্শের প্রতি তার সমর্থন পুনরায় নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার টোকিও থেকে অনুষ্ঠিত একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ৮৬ বছর বয়সী দালাই লামা বলেন যে, সংকীর্ণ মনের চীনা কমিউনিস্ট নেতারা তিব্বত এবং জিনজিয়াংয়ের অনন্য সংস্কৃতিকে স্বীকৃতি দেয় না।

তার মতে এই সমস্যার মূলে রয়েছে চীনের বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী ‘হান জনগণের অত্যধিক নিয়ন্ত্রণ’। তিনি বলেন, ‘আমি মাও সেতুং এর সময় থেকে কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের চিনি। তাদের ধ্যান-ধারণাগুলো ভালো। তবে কখনও কখনও তারা অনেক কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে’।

চীনের পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলের উইঘুর মুসলিমরা ক্রমবর্ধমানভাবে দেশটির সরকারি দমন-পীড়নের মুখোমুখি হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম উইঘুর মুসলিমদের ওপর ‘চীনা সরকার গণহত্যা চালাতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে।

সমালোচনার পাশাপাশি তিব্বতের ১৪তম দালাই লামা বলেন যে, তার মতোই মানুষ হিসেবে ‘চীনা ভাই ও বোনদের’ বিরুদ্ধে তার মধ্যে কোনো বিদ্বেষ নেই এবং তিনি কমিউনিজম ও মার্কসবাদের পেছনের ধারণাগুলোকেও ব্যাপকভাবে সমর্থন করেন।

১৯৫১ সালে চীন তিব্বত দখল করে নেওয়ার পর থেকে সেটি একটি সীমাবদ্ধ এবং সংবেদনশীল এলাকায় পরিণত হয়েছে।

দালাই লামা তাইওয়ানেরও প্রশংসা করেছেন, যাকে চীন সরকার একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে এবং যা অবশেষে আবার চীনের অংশ হবে বলেও মনে করে। তিনি বলেন যে, এই দ্বীপটি এখন চীনের প্রাচীন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রকৃত ভাণ্ডার। কারণ চীনের মূল ভূখণ্ড এখন ‘অত্যধিক রাজনীতিকরণকৃত’ হয়ে গেছে। সেখানে কমিউনিস্ট পার্টির ধ্যান-ধারণার বাইরের কোনো কথা বলা যায় না।

চীনের কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহের পর ১৯৫৯ সালে ভারতে পালিয়ে আসা দালাই লামাকে বেইজিং একজন বিপজ্জনক বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। তিনি তার দুর্গম, পার্বত্য মাতৃভূমিতে ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য বিশ্বব্যাপী সমর্থন আকর্ষণের জন্য কয়েক দশক ধরে কাজ করছেন।

দালাই লামা বলেন যে, চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করার তার কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে তিনি আবার দেশে যেতে চান।

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে, ভারতে শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে পছন্দ করি’। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলমানদের ওপর হিন্দু উগ্র ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান আক্রমণ সত্ত্বেও ভারতকে এটিকে ধর্মীয় সম্প্রীতির কেন্দ্র হিসেবে প্রশংসা করেন তিনি।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত জুলাই মাসে জাতীয় নেতা হিসেবে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতে তার প্রথম সফর করেন এবং সেখানকার জনগণকে তার ‘দলকে অনুসরণ করার’ আহ্বান জানান। গত ৩০ বছরের মধ্যে কোনো চীনা শীর্ষ নেতা এই প্রথম তিব্বত সফর করেন।

More News...

পাইপলাইন ফেটে ছড়িয়ে পড়ছে তেল, কুয়েতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা

জবি-ইবিসহ ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা