নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে বৃহস্পতিবার ঢাকার সড়কে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। অনেক স্থানে জ্যাম পর্যন্ত হয়েছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ট্রাফিক পুলিশ সিগন্যাল দিতেও বাধ্য হয়েছেন। আইন অমান্য করায় ৫৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ঢাকাসহ সারাদেশই প্রতিদিনই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। বিভাগীয় ও জেলা হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হয়। তা ছাড়া চলতি বছরের বিভিন্ন সময় ঘোষিত কয়েক দফা বিধিনিষেধের মতো এবার শিথিলতা দেখাচ্ছে না পুলিশ। লকডাউন আরো কঠোর করতে প্রতিদিন পুলিশ সদর দপ্তর, সবকটি মেট্রোপলিটন পুলিশ, রেঞ্জ ও জেলার এসপিসহ পুলিশের অনন্যা ইউনিটগুলোর কর্মকর্তারা বৈঠক করছেন।
জানা গেছে, লকডাউনে জরুরী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে গন্তব্য যেতে পারছেন। আবার কেউ কেউ অহেতুক রাস্তায় ঘোরাফেরা করছেন। ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাসে চড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন অনেকে। বিধিনিষেধের আওতামুক্ত ব্যক্তি ও যারা যৌক্তিক কারণ বলতে পারছেন, তাদেরই ঢাকা ছাড়তে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদের গাবতলী, সায়েদাবাদ ও আব্দুল্লাপুর চেকপোস্ট থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। আর যাদের বের হওয়ার কারণ যৌক্তিক মনে হচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ঢাকার একাধিক স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে পুলিশ ও র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল বেশি। লোকজনেরও যাতায়াত বেড়েছে। সড়কে অতিরিক্ত গাড়ি নামার কারণে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকিতে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে দেখা গেছে।
তবে লকডাউনে কয়েকদিন আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে তৎপরতা ছিল, তা বৃহস্পতিবার ততটা দেখা যায়নি।
পল্টন ও তেজগাঁওয়ের কিছু হোটেলে লোকজনকে বসে খেতে দেখা গেছে। গণপরিবহন না থাকায় ঢাকার সড়ক ছিল রিকশার দখলে। যারা ব্যক্তিগত কাজে বের হয়েছিলেন তারা পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে গেছেন। রিকশা চালকদের দ্বিগুণ ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ঢাকার বিভিন্নস্থানে টহল দিতে দেখা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, বিধি লঙ্ঘন করে বাসার বাইরে আসায় ৫৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২০৬ জনের কাছ থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। আর সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে বিনা কারণে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার কারণে ৪৩১টি গাড়িকে ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা আদায়ের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে বলে ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে সরজমিনে বিজয় সরণীর মোড়ে দেখা যায়, লকডাউনের মধ্যেও সিগন্যাল হয়েছে। অধিকাংশই ব্যক্তিগত গাড়ি। কিছু কাভার্ড ভ্যান দেখা গেছে।
দুপুর ২টার দিকে মৎস ভবনে দেখা যায়, সড়কে বরাবর একটি ব্যারিকেড বসিয়েছে পুলিশ। পুলিশের তল্লাশিতে সেই সড়কে যানযট সৃষ্টি হয়। যারা বের হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ না দেখাতে পেরেছেন তাদের গুনতে হয়েছে জরিমানা।