রাত ১১:০৮, ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অসময়ে পদ্মার ভাঙন, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীতে অসময়ের ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। অসহায় কৃষকরা তাদের ফসলি জমি রক্ষার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ায় পদ্মা নদীর পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। খাড়া হয়ে গেছে পদ্মার পাড়; কিন্তু এখনো নদীতে রয়েছে তীব্র স্রোত। স্রোতের টানে প্রতিদিন ভাঙছে খাড়া পাড়। বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। গোয়ালন্দের অন্তার মোড় হতে দেবগ্রাম মুন্সিবাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে এ অবস্থা।

সরেজমিন আলাপকালে দেবগ্রাম মুন্সিবাজার এলাকার কৃষক তোফাজ্জল হোসেন জানান, বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর নদীর পাড় ঘেঁষে তিনি ১ বিঘা জমিতে গুটি পেঁয়াজ লাগিয়েছেন; কিন্তু গত কয়েক দিনে তার দুই কাঠার মতো পেঁয়াজের জমি নদীতে ভেঙে গেছে।

খবির সরদার নামের অপর এক কৃষক জানান, তিনি নদীর তীর ঘেঁষে ২ বিঘা জমিতে রসুনের আবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে রসুন গজিয়ে বড় গাছ হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে তার ৫ কাঠার মতো রসুনখেত নদীতে ভেঙে গেছে।

একইভাবে সালাম সরদার, মোহন শেখ বালাম সরদারসহ আরও অনেকের পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, উচ্ছে, পটল, মরিচসহ অন্যান্য ফসলের জমি নদীতে ভেঙে গেছে।

বালাম সরদার জানান, নদী পাড়ের এই ফসলি জমিই তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন। এই জমি চাষাবাদ করেই তারা বেঁচে থাকেন। এই জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেলে পথে বসতে হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বহু বছর ধরে নদী ভাঙলেও সরকার এখানে ভাঙন প্রতিরোধে তেমন কোন উদ্যোগই নেয়নি। গত কয়েক বছরের ভাঙনে বহু মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমরা চাই এই শুষ্ক মৌসুমেই সরকার এখানে ভাঙন প্রতিরোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রায়হানুল হায়দার বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম এলাকাটি অত্যন্ত ভাঙনপ্রবণ এলাকা। চলতি বর্ষা মৌসুমে সেখানকার কাউয়ালজানি, বড়জালো, চরবরাট ও মুন্সিপাড়া এলাকায় প্রায় একশ বিঘা কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর এখনো স্রোতের টানে নদীর পাড় ভাঙছে। ভাঙছে আবাদি জমি। এখন শুষ্ক মৌসুমেই সেখানে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে সাধারণ কৃষকসহ এলাকার বাসিন্দারা অনেক উপকৃত হতো।

গোয়ালন্দ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের প্রশাসক মো. রুহুল আমিন জানান, বর্ষা মৌসুমে যখন নদী ভাঙে তখন ব্যবস্থা নিলে তা তেমন কার্যকরী হয় না। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেললে সেটা সচক্ষে দেখে দেখে ফেলা সম্ভব হয়। তাই ওই এলাকার সাধারণ কৃষক তথা এলাকাবাসীকে রক্ষার জন্য চলতি শুষ্ক মৌসুমেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।