কালিহাতীতে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৭৬টি ঘর

কালিহাতীতে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৭৬টি ঘর
কালিহাতী (টাঙ্গাইল): আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে চতুর্থ ধাপে আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে সারাদেশের আশ্রয়ণ প্রকল্পের গৃহ হস্তান্তর করবেন। তারই অংশ হিসাবে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় তৃতীয় ধাপে ৬টি ও চতুর্থ ধাপের আরো ৭০ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুই শতাংশ জমি সহ সেমি পাকা ঘর।
জানা গেছে, এরিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ভূমি অফিসের নিবিড় তদারকি এবং পিআইও অফিসের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ওই ৭৬টি ঘরের সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এলাকার অসহায়, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ৭৬ জন তাদের কাঙ্খিত গৃহ পেতে যাচ্ছেন।
ঘর পেতে যাওয়া পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক এ উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
উপজেলার পৌলী আশ্রয়ন কেন্দ্রে ঠাঁই পাওয়া জোসনা বেগম (৬০) জানান, একটি ঘরের অভাবে অনেক কষ্ট করে আমার স্বামীকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলাম। আমাদের অসহায় পরিবারের খোঁজ খবর কেউ রাখেননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। জমি,পাকা ঘর তৈরী করে দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিজের কোন জায়গা জমি, ঘর ছিল না। যেকারনে আমি সাভারে অন্যের বাড়িতে ভাড়া থেকে কাজ করতাম। আমার ভাই মারা যাওয়ার পর তিনদিন কাজে যেতে পারিনি। এজন্য আমাকে পরে আর কাজে নেয়নি। পরে বয়স হওয়ার কারণে আমি আর কোথাও কাজ পাইনি। আমার স্বামীরও অনেক বয়স হয়ে গেছে। তিনি জানান, বিশেষ করে কোথায় গেলে অন্তত একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে এ সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। এরই মধ্যে তিনি খবর পান আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকার দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জায়গাসহ ঘর দিবেন। তিনিও আবেদন করেন। কোনরকম ঝামেলা ও খরচ ছাড়াই পেয়ে যান জায়গাসহ ঘর।
এতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে তিনি বলেন, অনেক অনেক খুশি হয়েছি আমি। মাথার উপর একটু আশ্রয় পেয়েছি। নিজের ঘরে থাকতে পারবো ভাবতেই অন্যরকম আনন্দ লাগছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই, তার জন্য মন খুলে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করেন, তিনি যেন আমাদের মতো অসহায়দের পাশে থাকতে পারে। শুধু জোসনা বেগম না, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে দেখছেন যেন একটি পরিবারও ভূমিমহীন ও গৃহহীন না থাকে এই লক্ষ্যে কাজ করছেন কালিহাতী উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও ভুমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কালিহাতী উপজেলায় ইতোমধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ২০৩টি গৃহ নির্মাণের মধ্য দিয়ে তা হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও নতুন করে তৃতীয় পর্যায়ে ৬ টি ও চতুর্থ পর্যায়ের ৭০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পাকা গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। যা আগামী ২২ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি গৃহে দুটি বেডরুম, একটি বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট রয়েছে। প্রতিটি ঘরে নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। প্রতিটি গৃহে পৃথক মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। খুবই সচ্ছতার সাথে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

More News...

ওবায়দুল কাদেরের মস্তিষ্ক অলস-হৃদয় দুর্বল : রিজভী

ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন অনেকে, স্টেশনে ভিড়