‘বিনোদন মাধ্যমের দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না’

‘বিনোদন মাধ্যমের দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না’

বিনোদন ডেস্ক : রবিবার (১৯ মার্চ) সকালে বাংলাদেশে বিনোদন মাধ্যমের প্রভাব বিষয়ক একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ’ (ইউল্যাব)-এর ধানমন্ডি মিলনায়তনে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির গণমাধ্যম অধ্যয়ন ও সাংবাদিকতা বিভাগ।

আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশের বিনোদন মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন পেশাজীবী। প্রাণবন্ত আলোচনার মাধ্যমে বক্তারা বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল বিনোদন মাধ্যমের সম্ভাবনা ও প্রতিকূলতার বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

ইউল্যাবের শিক্ষক ও গবেষক অবন্তী হারুন বলেন, ‘যদিও বিনোদন মাধ্যমগুলোর মূল উদ্দেশ্য ব্যবসা করা, তারপরও তাদের মাথায় রাখতে হবে সমাজ কীভাবে তাদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। শুধুমাত্র বিনোদন দেবার যুক্তিতে তারা নিজেদের জন্য অসামাজিক কোনো নিয়মনীতি নির্ধারণ করতে পারে না।’

দৈনিক বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের বিনোদন সাংবাদিক সোহেল আহসান বলেন, ‘ওটিটির কারণে তরুণ দর্শকের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু ভাবনার বিষয় হলো ওটিটিতে কোনো সেন্সর নির্দেশিকা নেই। যে কারণে অনেক সময় এটি আমাদের সামাজিক নিয়ম উপেক্ষা করে এবং তরুণ প্রজন্মের মনে সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে।’

বৈঠকে বাংলাদেশে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সমূহের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সম্প্রতি প্রণীত ওটিটি প্ল্যাটফর্মভিত্তিক সম্প্রচার বিষয়ক খসড়া নীতিমালার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পায়। বক্তারা মতপ্রকাশ করেন যে, খসড়া নীতিমালাটি এশিয়া প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলসহ অন্যান্য জায়গায় ওটিটিভিত্তিক সম্প্রচার কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

 

চরকির কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট আদর রহমান বলেন, ‘ওটিটিতে সব ধরনের দর্শক বিদ্যমান। দিনে দিনে এটি আরও ব্যক্তিগত বিনোদন মাধ্যম হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে। সুতরাং, আমাদের সকলের দরকার নিজেদের সেন্সরশিপ সম্পর্কে অবগত থাকা। বিশ্বায়নের এই যুগে যখন আমরা সকল ধরনের বিনোদন মাধ্যমগুলো দেখবার সুযোগ পাচ্ছি, তখন আমদের নিজেদের সেন্সরশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি ও মেধাস্বত্ত্ব বিষয়ক আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মেসবাহ বলেন, ‘ওটিটি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আমাদের প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। তাছাড়া বিশ্বের কোথাও ওটিটি নিয়ন্ত্রণ জন্য অতিরিক্ত আইন নেই। তাহলে আমাদের কেন থাকতে হবে? বিদ্যমান আইন যদি পুরো প্রক্রিয়াকে তাদের অধীন আনতে পারে তাহলে নতুন করে অতিরিক্ত নির্দেশিকা কেন দরকার?’

বিশিষ্ট লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসূণ রহমান বলেন, “হাওয়া’, ‘পরাণ’ উভয়ই স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতার দ্বারা নির্মিত সিনেমা। তারা প্রথমে ছবিটি তৈরি করেন তারপর বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম বা চ্যানেলে বিক্রি করেন। বিনোদন মাধ্যমের দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, আমাদের আরও ভালো পরিকাঠামোর জন্য নীতি দরকার।’

পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউল্যাবের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডক্টর জুড উইলিয়াম হেনিলো। আলোচনায় বক্তারা বাংলাদেশে বিনোদন মাধ্যমের উন্নয়নের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে বিশেষ জোর দেন।

More News...

১৭৩ জন বাংলাদেশী মিয়ানমার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান