নির্বাচন-নির্বাচন খেলার ফাঁদে দেশের জনগণ আর পা দেবে না

নির্বাচন-নির্বাচন খেলার ফাঁদে দেশের জনগণ আর পা দেবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের নির্বাচন-নির্বাচন খেলার ফাঁদে দেশের জনগণ আর পা দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই’- শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে জাগপা।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে, এমনভাবে সাজিয়েছে যেখানে দেখা যাবে, নির্বাচন-নির্বাচন একটা খেলা হচ্ছে। নির্বাচনের নামে একটা তামাশা হবে, সেই তামাশায় দেখা যাবে তারাই নির্বাচিত হয়েছে। ওই ফাঁদে আর দেশের মানুষ পা দেবে না।

আওয়ামী লীগের নেতারা খুব সুন্দর-সুন্দর কথা বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা নাকি গণতন্ত্র এনেছে। এই হচ্ছে তাদের গণতন্ত্রের নমুনা। আবার তারা পাঁয়তারা করে নির্বাচন করার। বিশ্বকে দেখাবে, দেখো আমরা তো নির্বাচন দিয়েছি। এখন তারা কিন্তু আমাদেরকে (বিএনপিকে) সভা-সমাবেশে করতে বাধা দেয় না। ওটা আরেকটা শয়তানি। সমাবেশ করবে বাধা দেয় না। কিন্তু যখনি বলবো আমরা এখন বের হবো, মিছিল করবো, তখনি তারা আরেকটা সমাবেশ শুরু করে দেয়। তারা আমাদেরটাকে দেখিয়ে, পাশে আরেকটা শান্তির সমাবেশ করে।

তিনি আরও বলেন, তাদের শান্তির সমাবেশে কথা মনে হলে আমাদের ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শান্তি কমিটির কথা মনে হয়। পাকিস্তানিরা শান্তি কমিটি তৈরি করেছিলো। যারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করতো। সেভাবে তারা এই দেশে প্রতারণা করছে, মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। মানুষকে তারা মনে করছে এরা কিছুই বোঝে না। যা বোঝাবো তাই বুঝবে। সেই জায়গা থেকে আমরা উঠে এসেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমার দুঃখ এবং আনন্দ হয়, এতোগুলো টেলিভিশন ও পত্রিকা। কিন্তু কয়টা চ্যানেলে গণতন্ত্রের কথা বলে, কয়টা চ্যানেলে ভিন্নমতের কথা হয়। কয়টা পত্রিকায় ভিন্নমতের কথা বলা হয়। আমি এই বাংলাদেশে খুব ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখতে পাই। একটা ভয়-ভীতি, ত্রাস আওয়ামী লীগ এমনভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে, আগে যারা কথা বলতো ভয়ে তারাও এখন কথা বলে না। তারা অনেকে এখন টকশোতে যায় না। পত্রিকায় লেখে না। কোন শব্দটার জন্য আবার ডিজিটাল অ্যাক্টে মামলা হয়। এখন সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে এমন এক পর্যায়ে আনছে, তিনটা অনুচ্ছেদ নিয়ে তো কথাই বলা যায় না। এটা কখনও গণতান্ত্রিক সংবিধান হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, সংবিধান হচ্ছে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। জনগণ মনে করলে এই সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে। সেটাকে আওয়ামী লীগ বন্ধ করে দিয়েছে, জনগণকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে দিয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, খুব কষ্ট হচ্ছে দেশের মানুষ এতো দ্রুত সন্তুষ্ট হয়ে গেছে। এতো ভীতু হয়ে গেছে, কেন ওই সব মানুষরা যারা সত্য কথা বলতে পারেন, তারা সোচ্চার হচ্ছেন না? কেন তারা বলছেন না, তুমি যা করছো অন্যায় করছো। জনগণের অধিকারকে তুমি কেড়ে নিয়েছো। ৭১ সালের যে স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম, তার মূল বিষয়টাকে ধ্বংস করে দিয়েছো। তুমি স্বৈরাচারী, কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছো। এটা কেউ বলছেন না। আমাদের বিএনপির লোকদের রাস্তার মধ্যে হত্যা করে, তখন মনে হয় তারা মানুষ না, বিএনপি। ওর পরিচয়টা বিএনপি, মানুষ না। কেন আপনারা বলেন না, এটা হত্যা হয়েছে। কেন সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকিয়ে দিয়ে মেরে তাড়িয়ে দিলো। তথাকথিত সুশীল সমাজদের দেখলাম না, এটা নিয়ে কথা বলতে।

বিএনপি কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছে, প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য? না। মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য।

More News...

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা