মির্জাগঞ্জে তফসিল ঘোষণার আগেই সরগরম ভোটের মাঠ

মির্জাগঞ্জে তফসিল ঘোষণার আগেই সরগরম ভোটের মাঠ

মল্লিক মাকসুদ আহমেদ বায়েজীদ, মির্জাগঞ্জ থেকে : ভোটের তারিখ বা তফসিল ঘোষণার আগেই সরগরম হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৫নং কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ভোটের মাঠ। এরই মধ্যে কেওয়াবুনিয়া থেকে কলাগাছিয়া, কাকড়াবুনিয়া থেকে গাবুয়া পর্যন্ত চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। উত্তাপ ছড়াচ্ছে চায়ের কেটলিতে, ভোটের দামামা বেজে উঠেছে কাপ চামচের ঘর্ষণে, নামতা আওড়াচ্ছে পানের ফিকে ও চুরুটের ধোঁয়ায় । হিসাব কষা শুরু পথে প্রান্তরে।

আলাপচারিতায় মত্ত কে হতে পারে আগামী ইউনিয়ন অভিভাবক। মিলছেনা যেন অ্যালজেব্রার এই কঠিন সূত্র,সমীকরণ। তির্যক, ত্রিভুজ আর চতুষ্কোণই রয়ে যাচ্ছে জ্যামিতিক ভোটের ছক। সরলরেখার মতো সোজা হিসাব পেতে মাথা খাটাচ্ছে সবাই। ইউনিয়নটির অভ্যন্তরে এমন চিত্র সেটা নয়, পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন যেমন দেউলী সুবিদখালী,মজিদবাড়ীয়া,কাউনিয়া,কাজীরহাট,চান্দখালী,আয়লা ইউনিয়ন সমূহের মানুষও অঙ্ক মেলানোর চেষ্টা করছে কে আসবে আর কে হবে। ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন মাহাবুব আলম স্বপন। দুই বছর পার হতে না হতে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখে হঠাৎ হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নিয়মানুযায়ী ইউনিয়নটিতে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ক্ষমতাসীন আ’লীগ থেকে একাধিক প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সবাই নৌকা প্রতীক প্রাপ্তির প্রত্যাশায়। এর মধ্যে আলোচনায় থাকছেন দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচিত সাবেক চেয়ার ম্যান মোঃ জাগাঙ্গীর আলম। চার নির্বাচনী ইস্তেহার নিয়ে মাঠে নামছেন তিনি। এক. ইউনিয়নের উন্নয়ন করা দুই.ইউনিয়নের সকলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তিন.প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করা ৪.মাদক নির্মূল করা। থাকছেন প্রয়াত মাহাবুব আলম স্বপন এর স্ত্রী মোসাঃ নাইমা সুলতানা। দলীয় প্রতীক নৌকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শতভাগ আশাবাদী তাঁরা। ইস্তেহারে থাকছে প্রয়াত চেয়ারম্যানের অসমাপ্ত কাজ সমূহ সমাপ্ত করা, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা। সন্ত্রাস,মাদক নির্মূলে সর্বাত্বক চেষ্টা করা।

নির্বাচনে থাকতে পারেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এম এম নুরুজ্জামান নিরু। মাঠে থাকছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মোঃ ফোরকান হোসেন মোল্লা। স্বাধীন বাংলার প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও কাকড়াবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ইউনুস আলী মোল্লার ভাতিজা তিনি। মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার সাথে অসহায়- হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবেন। এছাড়াও সরকারের দেওয়া সমস্ত ভাতা কোনরকম উৎকোচ ছাড়া ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া এবং সকল গ্ৰামীণ জনপথ চলাচলের উপযোগী করতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা থাকবে তাঁর।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক এর পূত্র মোহাম্মাদ সোহেল। মোঃ মোজাম্মেল হক উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। কিন্তু মোহাম্মাদ সোহেল রাজনীতিতে সক্রিয় ও জড়িত নন বলে জানান। ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়ন, বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে স্বনির্ভর হতে প্রত্যেক বেকার ও কর্মক্ষমদের উদ্ভূদ্ধ করবেন তিনি। এছাড়াও মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবেন। অন্যদিকে নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও কৌশলগত ভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছেন ইউনিয়ন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। আলোচনায় আসছে সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেম্বার মোঃ মকবুল হোসেন এর পূত্র ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল হোসেন, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম হাশেম মাষ্টার এর ছেলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মজিবর রহমান এর নাম। তবে তাঁদের নির্বাচন নির্ভর করবে অনেকটা দলের হাই কমান্ডের নির্দেশের উপর। একাধিক সূত্রে জানা যায়, এই ইউনিয়নে বিএনপির রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। বিএনপির প্রার্থীদের নির্বাচনে না আসার সম্ভাবনা বেশি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাঁরা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। তবে বিগত সময় যাদের হাতে তাঁরা নিরাপদ ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে এই ভোট ব্যাংক ঐ বাক্সেই যাবে বলে এমন আভাস মেলে। নির্বাচন করতে পারেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন চরমোনাই এর প্রার্থী এর মোঃ নুরু মৃধা।

More News...

পৃথিবীর বৃহত্তম দুর্নীতিতে বিজেপি: ভারতের অর্থমন্ত্রীর স্বামীর মন্তব্য

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল