নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরে চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর। মেলার প্রথম ভাগে ক্রেতা উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও শেষ দিনগুলোতে মানুষের ঢল নেমেছে। শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বেচাকেনা। বিভিন্ন পণ্যের স্টলে চলছে বিশেষ ছাড়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে বেচাকেনা কয়েকগুণ বেড়েছে।সরেজমিনে রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
বন্ধুদের নিয়ে মেলায় এসেছেন আজাদ নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, সবসময় আমরা বন্ধুরা শেষ সময়ে আসি। কারণ, এসময়ে বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়। এতোদিন যে পণ্যগুলোতে ৩০ শতাংশ ছাড় ছিল এখন সেগুলো ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে।
মেলায় আসা শাহানাজ শানু নামের এক নারী জানান, মেলায় শেষ সময়ে আসার একটাই উদ্দেশ্য, কম টাকায় বেশি জিনিস কেনা। এখন মানুষের চাপ বেশি থাকলেও প্রচুর ছাড়ে জিনিসপত্র কিনতে পারছেন বলে জানান তিনি।
মেলা প্রাঙ্গণে ভিশন প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম জানান, মেলা উপলক্ষে ক্রেতাদের জন্য আমরা নানা অফার দিয়েছি। মেলার প্রথম দিন থেকেই ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। শেষ সময়ে আমাদের প্যাভিলিয়নে উপচেপড়া ভিড় রয়েছে। আশা করছি, এবার আমাদের ব্যবসা ভালো হবে।
জামদানি ওয়ার্ল্ডের ইনচার্জ নাইম ইসলাম জানান, প্রতিটি শাড়ি আমাদের কারিগররা যত্ন নিয়ে তৈরি করেন। মেলার শুরুর দিকে ক্রেতাদের চাহিদা কম থাকলেও শেষ সময়ে ভালো সাড়া পাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের স্টলগুলোতে ৬০ শতাংশ ছাড় চলছে। আশা করছি, এবার আমরা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কেনাবেচা করতে পারবো।
প্রভিডেন্স প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ ফারহান আহমেদ ফারুক বলেন, আমাদের পণ্যগুলো ক্রেতাদের বেশ পছন্দের। মেলার শুরু থেকেই আমাদের শো-রুমে প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থী ছিল। এতোদিন ৫০ শতাংশ ছাড় দিলেও শেষ মুহূর্তে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড়ে পণ্য বিক্রি করছি।
বাণিজ্যমেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত বছর মেলায় প্রায় ৭০ কোটি টাকার বেচাকেনা হয়েছিল। এবার শুরুতে আমাদের প্রত্যাশা ছিল ১২০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে। তবে মেলার দুদিন বাকি থাকতেই এরই মধ্যে ১০০ কোটি টাকার বেশি বেচাবিক্রি হয়েছে। আশা করছি, আগামী দুদিন আরও বেশি ক্রেতা সমাগম ঘটবে।
স্থায়ী ভেন্যুতে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রধান ফটক করা হয়েছে মেট্রোরেলের আদলে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।
এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেলায় ১৭টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। দেশ-বিদেশের মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। গতবার এ সংখ্যা ছিল ২২৫টি।