অনলাইন ডেস্ক : গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে অনেকের মাথাব্যথা করে। সেই ব্যথা যে মাত্রারই হোক, তা এক ধরনের সমস্যা। এতে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হয়। গরমে মাথাব্যথার অন্যতম কারণ পানিশূন্যতা। শরীর থেকে বেশি ঘাম ঝরে গেলে আমরা শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ হারাই। ফলে শরীর পানিশূন্য হয়, ইলেকট্রোলাইট বা লবণের তারতম্য হয়। এর উপসর্গ হলো- মাথা ধরা, মাথা ঝিমঝিম করা, স্পষ্ট চিন্তা না করতে পারা। অনেকক্ষণ বাইরে কাটানোর পর এমন বোধ হলে দ্রুত পানি পান করা ভালো অথবা লবণপানি, ডাবের পানি, লেবুর শরবত ইত্যাদি পান করলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সময় মাইগ্রেনের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। তা নিয়ন্ত্রণে রাখার ভালো উপায় হলো, আসল কারণ খুঁজে বের করা। মাইগ্রেনের যন্ত্রণা শুরু হওয়ার আগে কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে স্থায়ী মাথাব্যথা, মাথার একপাশে তীব্র ব্যথা বা স্পন্দিত ব্যথা, আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা এবং বমি বমি ভাব।
মাইগ্রেনের এ উপসর্গ মাথা যন্ত্রণার এক থেকে দুই দিন আগে শুরু হতে পারে, যা প্রোড্রোম পর্যায় হিসাবে পরিচিত। এতে ক্লান্তি বা কম শক্তি, হতাশা, অতিসক্রিয়তা, বিরক্তি বা ঘাড় শক্ত হওয়ার মতো উপসর্গ থাকে। যেহেতু প্রতিদিনই এখন রোদে বের হতে হয়, তাই এ উপসর্গগুলোর খেয়াল রাখতে হবে। মাইগ্রেনের যে কোনো উপসর্গ উপলব্ধি করলেই সঙ্গে সঙ্গে ডায়েরিতে লিখে রাখুন। এতে রোগের কারণ জানা যাবে। একইসঙ্গে কোন দিনগুলোয় মাইগ্রেনের যন্ত্রণা হচ্ছে এবং সে দিনগুলোয় কী খাচ্ছেন, সেগুলো লিখে রাখতে হবে। পাশাপাশি বেশিক্ষণ রোদে থাকছেন কিনা কিংবা কতক্ষণ রোদে থাকছেন, তা খেয়াল রাখুন।
যদি সাময়িকভাবে এ তাপদাহের মধ্যে মাইগ্রেনের সমস্যা বশে রাখতে চান, তাহলে মেনে চলুন সহজ কিছু উপায়। ডিহাইড্রেশন মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এ গরমে কোনোভাবেই শরীরে পানিশূন্যতার সমস্যা তৈরি হতে দেওয়া যাবে না। ব্যাগে ছাতা ও পানির বোতল রাখুন। টুপি ও রোদচশমা ব্যবহার করুন।
চিকিৎসকদের মতে, গরমে মাথাব্যথা এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়া আরও কয়েকটি উপায়ে মাথাব্যথা প্রতিরোধ করা যায়। যেমন- এ সময়ে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা প্রয়োজন। দিনে তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। শরীর ঠাণ্ডা করে এমন পানীয় গরমের সময় খাওয়া দরকার। যেমন- তরমুজের রস, নারকেল বা ডাবের পানি, ঠা-া দুধ ইত্যাদি প্রতিদিনের খাবারতালিকায় রাখা যেতে পারে। এ সময় ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। বরং আদা চা পান করতে পারেন। ম্যাগনেসিয়ামপূর্ণ খাবার, যেমন- কলা, আনারস, তরমুজ, অ্যাপ্রিকট গরমের দিনের আদর্শ খাবার। নিয়মিত দই খাওয়ার অভ্যাস করুন। এ ছাড়া বাটার মিল্ক খেতে পারেন। গরমের এ সময় ফ্ল্যাক্স সিড বা তিসির বীজ খুবই উপকারী। বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না। রোদে ছাতা ব্যবহার করুন। প্রতিদিন এক্সারসাইজ করুন। এক্সারসাইজ মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এক্সারসাইজ করলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে। ফলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ে এবং অনেক ঝুঁকিপূর্ণ রোগ প্রতিরোধ করে। নিয়মিত এক্সারসাইজ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং হতাশা কমায়। আমাদের নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা দূর করে আমাদের মন প্রফুল্ল করে তোলে। সারাদিন অনেক কাজ করার পরেও আমাদের শরীর ও মন থাকে সজীব থাকে।