যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা ও ডিএফসি তহবিলের আহ্বান বাংলাদেশের

যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা ও ডিএফসি তহবিলের আহ্বান বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকার এবং বাংলাদেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (ডিএফসি) থেকে তহবিল দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে অনুরোধ করেছে এবং একই সাথে বাংলাদেশের উৎপাদন খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি স্থানান্তর চেয়েছে। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশন থেকে ইস্যু করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে অনুষ্ঠিত দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় উচ্চ-স্তরের অর্থনৈতিক পরামর্শ (এইচএলইসি) সভায় বাংলাদেশ এই অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি ও পরিবেশ বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজ দিনব্যাপী বৈঠকে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এমপি; বেগম শামসুন নাহার, এমপি; এম শহিদুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক উপ-সহকারী সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত কেলি কেইডারলিং, সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার উইলসন, শ্রম দফতরের আন্তর্জাতিক বিষযয়ক ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি, থিয়া লি এবং মার্কিন দফতরের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন। বৈঠকে উপদেষ্টা রহমান দুই দেশের মধ্যে বর্ধিত অর্থনৈতিক সহযোগিতার মূল উপাদান হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ওপর জোর দেন।
তিনি মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য ডেডিকেটেড ইকোনমিক জোন স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্বের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেন। উপদেষ্টা বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারদের বিশাল পুলের সুবিধা নিয়ে হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ করতে মার্কিন আইটি কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সুসংহত নীতির ধারাবাহিকতাই গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির চাবিকাঠি। আন্ডার সেক্রেটারি জোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজ বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কোভিড-১৯ টিকাদানে অসাধারণ সাফল্যের প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের শ্রম খাতে অগ্রগতির কথা স্বীকার করে ফার্নান্দেজ শ্রম ইস্যুতে নিয়োজিত থাকার জন্য একটি নিয়মিত পরামর্শ ব্যবস্থার প্রস্তাব করেন।
শ্রম ইস্যুতে দ্বিতীয় অধিবেশনে বাংলাদেশে আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পুটিয়েইনেন শ্রম খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে একটি স্বতন্ত্র উপস্থাপনা পেশ করেন। আমেরিকান ফেডারেশন অফ লেবার অ্যান্ড কংগ্রেস অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশনস (এএফএল-সিআইও)’র শ্রমিক অধিকার সমন্বয়কারী লরা গুতেরেজ, সলিডারিটি সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক শাওনা বাদের-ব্লাউ এবং বাংলাদেশের শ্রমিক প্রতিনিধি কাজী রহিমা আক্তার এ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। উভয় পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সামুদ্রিক ও নীল অর্থনীতি, কোভিড-১৯, পর্যটন ও আতিথেয়তা এবং বেসামরিক বিমান চলাচলের বিষয়ে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছে। বাংলাদেশ পক্ষ ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি বিমানের ফ্লাইট পুনরায় চালু করা সরকারের জন্য একটি অগ্রাধিকার উল্লেখ করে এ বিষয়ে আশু পদক্ষেপের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা যত দ্রুত সম্ভব ফ্লাইট পুনরায় চালু করার জন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ ও মার্কিন উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর গুরুত্বের বিষয়ে একমত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী আলম বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। উভয় পক্ষ ২০২৩ সালে ঢাকায় পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে তৃতীয় দফা আলোচনার আয়োজনে সম্মত হয়।

More News...

ওবায়দুল কাদেরের মস্তিষ্ক অলস-হৃদয় দুর্বল : রিজভী

ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন অনেকে, স্টেশনে ভিড়