দিনভর বৃষ্টিতে পানি, যানজট, পরিবহন সংকটে ভোগান্তি

দিনভর বৃষ্টিতে পানি, যানজট, পরিবহন সংকটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে রবিবার সকাল থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টি চলছে। এতে পরিবহন সংকটের পাশাপাশি ঘর থেকে বের হওয়া নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে। সড়কে জমে থাকা পানি আর যানজট ভোগান্তি বাড়িয়েছে।

বাসা-বাড়ি থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে আর চলমান এইচএসসি পরীক্ষা ও স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও পড়েছেন দুর্ভোগে। রাজধানী জুড়ে চলমান উন্নয়ন কাজের ফলে বেশ কিছু সড়কে পানি জমতে দেখা গেছে।

আজিমপুর, জিগাতলী, লালবাগ, গ্রিন রোড, ধানমন্ডি, বাড্ডা, রামপুরা, হাতিরঝিল, নাবিস্কো, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, পল্লবীসহ বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। মঙ্গলবার সূর্যের দেখা মিলতে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে সোমবার সড়কে বাস ও মিনিবাস ছিল কম। সেই সঙ্গে রিকশা বা ছোট যানবাহনও বৃষ্টির জন্য যাত্রী পরিবহনে ছিল অনীহা। বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীর জটলা থাকলেও চাহিদার তুলনায় যানবাহন ছিল না। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে যানবাহন পেলেও সেখানে উঠে বসা ছিল আরেকটা যুদ্ধের মতো। তাই অনেক যাত্রীদের বৃষ্টিতে ভিজে পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

মহাখালী থেকে বাংলা মোটরের অফিসে আসতে প্রায় দুই ঘণ্টা যানজট মাড়িয়ে নিজ কর্মস্থলে পৌঁছাতে হয়েছে বলে জানান রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, ‘সোমবার ভোর থেকেই ঢাকায় বৃষ্টি। বাসা থেকে বের হয়ে দীর্ঘ সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। বাস পাওয়ার পর মহাখালী থেকে বাংলামোটর মোড়ে আসতে সময় লেগেছে দুই ঘণ্টা। রাস্তায় বেশ কিছু স্থানে পানি ছিল। তাই ফার্মগেট থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত যানবাহনের গতি ছিল একেবারে কম। এ রাস্তাটুকু মেট্রোরেলের কাজের জন্য যানবাহন চলে এক লেনে। সেখানে খানাখন্দ আর গর্তে জমে ছিল পানি। যার জন্য বাসের পাশাপাশি ছোট যানবাহনগুলো চলেছে খুব সর্তকর্তার সঙ্গে। এসব কারণে যানবাহনের জটলা লেগেই ছিল পুরো রাস্তায়।’

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মিরপুরের বাসা থেকে সকালে বের হয়ে নিউ মার্কেট আসতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি সময় লেগেছে। দারুসসালাম রোডের বিভিন্ন অংশে দেখা গেছে ভয়াবহ যানজট। এরপর কল্যাণপুর, শ্যামলী থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত যানবাহনের জটলা ছিল। অনেক স্থানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে দেখা যায়নি। ফলে মূল সড়কের সংযোগগুলোতে এলোমেলোভাবে অনেক যানবাহন প্রবেশ করে যানজটের সৃষ্টি করেছে।’

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সরকারি একটি দপ্তরে কর্মরত আরিফা আক্তার।

তিনি বলেন, নাখাল পাড়ার বাসা থেকে বের হয়েই শুরুতে লেগুনা পেতে বেশ অসুবিধা হয়েছে। এরপর ফার্মগেট আসার এসে বাসের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। বাস পাওয়ার পর মৎস্য ভবনের সামনে বাস থেকে নেমে দেখলাম সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা। আবার মৎস্য ভবনের সামনে নেমে নিজ কর্মস্থল সেগুনবাগিচা আসার জন্য জন্য রিকশা ভাড়াও দিতে হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি।

বনশ্রী বি-ব্লকের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘সদরঘাট এলাকায় ঢাকা জজ কোর্টে নিয়মিত মোটরসাইকেল দিয়ে যাতায়াত করি। সোমবার বৃষ্টির জন্য পড়তে হয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনায়। ফকিরাপুল এলাকায় আসার পর পানির নিচে তলিয়ে থাকা গর্তে মোটরসাইকেল নিয়ে পড়ে গেছি। মোটরসাইকেলের গতি কম থাকায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছি।’

গণমাধ্যমকর্মী আবির হাকিম জানান, বসুন্ধারা আবাসিক এলাকা থেকে বের হওয়ার পর ভাটারার ছোলমাইদ এলাকার রাস্তায় এসে তিনি আটকে যান। পুরো রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে থাকায় মোটরসাইকেল নিয়েও আসার সুযোগ হয়নি।

More News...

রোজা রেখেও মাপা যাবে রক্তের সুগার

ভারতের হিন্দুরা আমাকে অনেক ভালোবাসে : জাকির নায়েক