মায়ের কবর জিয়ারতে ভারতে যাওয়া হলো না প্রকৌশলীর

মায়ের কবর জিয়ারতে ভারতে যাওয়া হলো না প্রকৌশলীর

হাফিজুর শেখ চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছার সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে পানিতে ডুবে মারা গেছেন রফিকুল ইসলাম জনি (৫৫) নামে এক প্রকৌশলী। তিনি ঢাকার ৭০৬ বড় মগবাজারের বাসিন্দা ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে উপজেলার মাশিলা সীমান্তের গদাধরপুর বাওড়ে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ভারতে তার খালাতো ভাই মোহনের সাথে কথা বলে ও ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে ভোর ৪টার দিকে মরদেহটি চৌগাছা থানায় নেয়া হয়।

নিহতের বোনের ছেলে যশোর সরকারি পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ (পিআরএল) মাশরেকুল ইসলাম বলেন, রফিকুল ইসলাম একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী। তার স্ত্রী কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যলয়ের একজন কর্মকর্তা। তিনি কয়েকদিন আগে যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় আমার বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের কাজ তদারকি করতে আসেন। ২/৩ দিন আগে সে (রফিকুল ইসলাম মাশরেকুল ইসলামের থেকে বয়সে ছোট) আমাকে বলে মামা আমি তো মায়ের কবর জিয়ারত করতে (ভারতে অবস্থিত) যাবো। কিন্তু পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আমি তাকে বলি আমি ঢাকায় সচিবালয়ে যাচ্ছি। এসে তোমার পাসপোর্টের বিষয়টি দেখবো। এরই মধ্যে সে গত বুধবার যশোর থেকে ঝিকরগাছায় তার ভাইয়ের মেয়ের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে ভারতে খালাতো ভাই মোহনের সাথে যোগাযোগ করে চৌগাছার সীমান্ত পার হয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো। ভারতে যাওয়ার সময় পানিতে ডুবে মারা যায় বলে মোহন মুঠোফোনে জেনে থানায় এসেছি।

প্রত্যক্ষদর্শী গদাধরপুর বাওড়ের নাইটগার্ড শাহিন ও নওফেল বলেন, রাত ৮টা ৪০মিনিটের দিকে প্রতিদিনের মতো নৌকায় চড়ে বাওড় পাহারা দেয়ার সময় নৌকা থেকে দেখি বাওড়ের গদাধরপুর মসজিদ ঘাটের পাশে একটি মানুষের দেহ পড়ে আছে। মানুষের দেহ নিশ্চিত হয়ে মাশিলা বিজিবি ক্যাম্পে খবর দিই। পরে বিজিবি সদস্যরা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করেন।

গদাধরপুর গ্রামের মৃত খলিলের ছেলে শান্তি জানান, ভারতের বয়রায় নানা বাড়ি হওয়ার সুবাদে সেখানকার অভি নামে দালালের সাথে মাঝেমধ্যে মুঠোফোনে কথা হতো। বৃহস্পতিবার সে মুঠোফোনে জানায় একজন লোক আসবে। তাকে ভারতে নিতে হবে। পরে দালাল অভি এসে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মসজিদ ঘাট থেকে রফিকুল ইসলামকে নিয়ে বাওড় দিয়ে সাতরিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পরে সে ফোন দিয়ে বলে যাকে নিয়ে যাচ্ছিলাম সে হাসপাশ (পানিতে ডুবে হাবুডুবু করা) করছিলো। যেখান থেকে নিয়ে এসেছিলাম সেখানেই তাকে রেখে এসেছি। পরে বিজিবি সেখানে যায়। তাঁরও পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।

More News...

রোববার থেকে চালের বস্তায় তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক

বিএনপি বাঙালি সংস্কৃতিকে সহ্য করতে পারে না: কাদের