যে গ্রামের অনেক মেয়ে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছেই ছেলে হয়ে যায়!

যে গ্রামের অনেক মেয়ে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছেই ছেলে হয়ে যায়!

অনলাইন ডেস্ক : বয়ঃসন্ধি ছোঁয়া পর্যন্ত জনির পরিবারের কেউই জানতেন না তাদের আদরের ছোট্ট মেয়েটি আসলে ছেলে। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছে ধীরে ধীরে তার শরীরে ছেলেদের সমস্ত বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়, যা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান সবাই।

ছোট থেকে জনির আচরণ অবশ্য মেয়েদের মতো ছিল না। সে সবসময়ই ছেলেদের সঙ্গে খেলতে ভালোবাসত। মেয়েদের মতো পোশাক পরতে এবং সাজতে ভালো লাগতো না তার। হাবেভাবে পুরোদস্তুর ছেলে ছিল। জনি বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর পরই তার বাহ্যিক পরিবর্তনগুলো চোখে পড়তে শুরু করে পরিবারের।

এ রকম ঘটনা জনির সঙ্গেই শুধু ঘটেনি। ক্যালিফোর্নিয়ার ছোট্ট গ্রাম স্যালিনাসে জনির মতো আরও অনেকে রয়েছে। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছে যাদের মধ্যে পুরুষের বৈশিষ্ট প্রকাশ পেয়েছে। কার্লা নামে সাত বছরের একটি মেয়েও যেমন পরবর্তীকালে কার্লোস হয়ে উঠেছিল।

কেন এমন হয়? গ্রামবাসীদের অনেকে বিশ্বাস করতেন, গ্রামের ওপর নাকি কোনও পুরনো অভিশাপ রয়েছে। সে কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে। কিন্তু বিজ্ঞান অন্য কথা বলে। চিকিৎসকদের মতে, জনি, কার্লোস এবং তাদের মতো গ্রামের অন্য অনেক শিশু এক বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত।

রোগটির নাম ফাইভ আলফা রিডাকটেজ ডেফিসিয়েন্সি। ফাইভ আলফা রিডাকটেজ মানব শরীরের একটি উৎসেচক। এই উৎসেচকের ঘাটতি দেখা দিলেই এমন ঘটনা ঘটে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শরীরে যে জিনটি এই উৎসেচক তৈরির নির্দেশ বহন করে থাকে, তার মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে এই উৎসেচক যথাযথ পরিমাণে উৎপন্ন হয় না।

ফাইভ আলফা রিডাকটেজের কাজই হল স্ত্রী শরীরে পুরুষের বৈশিষ্ট্য বাহক হরমোন টেস্টোস্টেরনের বিপাক ঘটিয়ে তাকে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরনে পরিণত করা। স্ত্রী শরীরে এটাই স্বাভাবিক জৈবিক ক্রিয়া। এর ফলেই পুরুষের বৈশিষ্ট প্রকাশ পায় না এবং ওই ব্যক্তি একজন স্ত্রী হিসেবে চিহ্নিত হন। কিন্তু এই উৎসেচকের ঘাটতি দেখা দিলে টেস্টোস্টেরনের বিপাক ঘটিয়ে তাকে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরনে পরিণত করার জৈবিক ক্রিয়াটি ব্যাহত হয়ে থাকে এবং শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উপস্থিতির জন্য পুরুষের বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়।

এই বিরল জিনগত রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, জিনগতভাবে তারা পুরুষ হওয়া সত্ত্বেও বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত তাদের মধ্যে পুরুষের বাহ্যিক বৈশিষ্টগুলো (যেমন পুরুষের লিঙ্গের বৃদ্ধি, পেশির গঠন ইত্যাদি) প্রকাশ পায় না। পরে ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পেতে শুরু করে।

জনি ও কার্লোসের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনই ঘটেছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার স্যালিনাসে এই বিরল জিনগত রোগের প্রকোপ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের থেকে তুলনামূলক বেশিই চোখে পড়ে। প্রতি ৯০ শিশুর মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত। স্যালিনাসে এই রোগের প্রকোপ বেশি হওয়ার রহস্য অবশ্য আজও অজানা রয়ে গেছে।

More News...

বিনামূল্যে চিকিৎসা মেলে ‘ফ্রি স্ট্রোক ক্লিনিকে’

বিয়ে করতে এনে প্রেমিকাকে যৌনপল্লীতে বিক্রি করলেন প্রেমিক