কুরআনের মোজেজা ও ওলিউল্লাহি দর্শন

কুরআনের মোজেজা ও ওলিউল্লাহি দর্শন

মূল: মাওলানা ওবায়দুল্লাহ সিন্ধি, তর্জমা: মওলবি আশরাফ : ইমাম শাহ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবি বলেন, ‘আমি অধম যেসব নেয়ামত লাভে ধন্য হয়েছি, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় নেয়ামতের একটি হলো— আমার বেশ কয়েকবার আব্বাজানের কুরআন তালিমের মজলিশে বসার সৌভাগ্য হয়েছে। আব্বাজান সূক্ষ্মভাবে, গভীর চিন্তা-ফিকির করে কুরআনের অর্থ করতেন। আয়াতের শানে ‍নুজুল বর্ণনা করতেন। কোনো প্রেক্ষাপটে বিস্তারিত জানার জন্য নির্দিষ্ট তাফসির ইঙ্গিত করতেন। এর ফলে আমার সামনে যুদ্ধজয় ও সফলতার এক বিশাল ময়দান উন্মুক্ত হয়ে যায়। আব্বাজানের নীতি ছিল এমন যে, তার বন্ধুদের মজলিশে প্রত্যেক দিন তিন রুকুর কম কুরআন পাঠ করতেন এবং তার অর্থ নিয়ে খুবই জ্ঞানতাত্ত্বিক আলোচনা করতেন।’

খোদ শাহ সাহেব পবিত্র হজ থেকে ফিরে আসার পাঁচ বছর পর পবিত্র কুরআন ফারসিতে তর্জমা করেন, এবং প্রথমবারের মতো তালিম দিতে শুরু করেন। শাহ সাহেব পর্যবেক্ষণ করে দেখেছিলেন যে তার সময়কালে হাই সোসাইটির লোকজন প্রায়োগিক দর্শন জানে ও বোঝে। তাই শাহ সাহেব প্রায়োগিক দর্শনকে কুরআনি শিক্ষা প্রচারের মাধ্যম বানান।

ওই সময়ে প্রচলিত ও জনপ্রিয় যে দর্শন ছিল, সেটাকেই কুরআনি শিক্ষার অনুগামী বানিয়ে তোলেন। এভাবে প্রজ্ঞামতিত্বের সঙ্গে কুরআনের প্রায়োগিক শিক্ষা মুসলমানদের সামনে হাজির করেন।

শাহ সাহেব ১২ বছর নিজের আশপাশের সমাজকে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, এবং এই ১২ বছরের পর্যবেক্ষণে তিনি নিজের কর্মসূচি দুটো মূলনীতিতে সাজান :

এক. কুরআনের প্রায়োগিক শিক্ষা প্রয়োজন। কেননা কুরআন মানুষের জীবনযাপনের সব সমস্যার জ্ঞানতাত্ত্বিক সমাধানের আকরগ্রন্থ। মানুষের জীবনযাপন সম্পর্কে কুরআনের বর্ণনা প্রকৃত অর্থেই একটি অলৌকিক ব্যাপার।

দুই, অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা প্রতিষ্ঠা করা। কেননা লেনদেন সংক্রান্ত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের সবধরনের কার্যত ও চরিত্রগত অন্যায় ও অন্যায্যতার অন্যতম মূল কারণ আর্থসামাজিক ভারসাম্যহীনতা।

এতে কোনো সন্দেহ নাই যে কুরআনের মোজেজা হওয়া সব মুসলমানের কাছেই স্বীকৃত। কিন্তু প্রত্যেক গোষ্ঠীর দৃষ্টিতে কুরআনের মোজেজা হওয়ার বিষয়টি ভিন্ন-ভিন্ন।

দার্শনিক মনোভাব রাখেন এমন আলেমগণ বহু আগে থেকে বলে আসছেন যে, কুরআনের মোজেজা হলো তার আলঙ্কারিক ভাষারীতি। কিন্তু তাদের কথা যদি মেনে নিই তাহলে আপত্তি ওঠে যারা আরবিভাষী না, তারা তো ভাষার অলঙ্কার বুঝবে না, তার ক্ষেত্রে কুরআন কীভাবে মোজেজা হবে? এই জন্য আমি মনে করি কুরআনের মোজেজার মানদণ্ড অলঙ্কারশাস্ত্র হতে পারে না।

শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবি বলেন— কুরআনের মোজেজা হলো তাতে নির্দেশিত জীবনবিধান। এবং কুরআনকে কার্যত বাস্তবায়নের পরবর্তী ফলাফলও তার মোজেজা। এখন কুরআনে নির্দেশিত জীবনবিধান প্রত্যেক মানুষের জন্য— চাই আরব হোক বা অনারব, সাধারণ মানুষ হোক বা আলেম, দার্শনিক হোক বা সাধাসিধা বুদ্ধির— সবার জন্যই উপকারী এবং সবাই তার মোজেজা উপলদ্ধি করতে পারে।

কিন্তু কুরআনের মোজেজা যদি আরবি ভাষার সাহিত্য ও অলঙ্কারশাস্ত্রের সম্পৃক্ত করা হয়, তাহলে গুটিকয়েক মানুষই শুধু তা বুঝবে, আর একথা কোনো পরিপূর্ণ ধারণা দেয় না।

কুরআনি শিক্ষার কার্যত বাস্তবায়ন ছাড়া শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবির বিপ্লবী কার্যক্রমের দ্বিতীয় মূলনীতি হলো অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা প্রতিষ্ঠা ও ন্যায্য বণ্টন করা।

সাধারণত ভাবা হয় আত্মশুদ্ধির শুরু আখলাক থেকে, যদিও বেঁচে থাকার তাগিদে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবে খুব হেলেফেলায়। অথচ মানবজীবনের সাথে অর্থনীতির সম্পর্কই সবচেয়ে বেশি, তারচেয়ে বেশি সরাসরি সম্পর্ক অন্যকিছুর নেই। আর একেই হেলেফেলা করার কারণে আমাদের রাজনীতি ফাঁপা কুমড়োর মতো।

আমাদের বড় বড় জ্ঞানীগুণী লোক, সুফি-সাধুগণ সবাই গণমানুষের রাজনীতি থেকে দূরে থাকাকে কামালিয়াত মনে করেন। আধ্যাত্মিকতা বিষয়ক প্রচলিত বইগুলোর সবচেয়ে বড় কমতি এখানেই— এই বইগুলোর রচয়িতারা মানবস্বভাবের সাথে অর্থনীতির সম্পর্ক ঠিক ধরতে পারেন না।

অন্যদিকে শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবি জীবনের এই বাস্তবতাকে একটা পরিপূর্ণ রূপ দান করেছেন। তার কিতাবে বারবার এই বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেন।

হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগায় তিনি উল্লেখ করেন: যদি কোনো সমাজে নগরসভ্যতা পর্যায়ক্রমে উন্নত হতে থাকে, তাহলে সেই সমাজ কারিগরি ও যান্ত্রিক বিকাশে চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছে যায়। যদি ঠিক সেই সময় শাসকশ্রেণি আরাম-আয়েশ ও গর্ব-অহমিকায় জীবনযাপন করতে শুরু করে, তাহলে এর প্রভাবে সাধারণ নাগরিকদের ওপর এতবেশি চাপ পড়ে যে সমাজের এক শ্রেণি পশুর মতো জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়।

মানুষের স্বাভাবিক জীবনের সব আদর্শ ওই সময় অর্থহীন হয়ে যায়, যখন কোনো জালেম সমাজে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্যতা সৃষ্টি করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তোলে, আর মানুষ গরু-গাধার মতো স্রেফ রুটি-রুজির জন্য সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে যায়। যখন মানুষের ওপর এহেন মুসিবত আসে, তখন আল্লাহ সেই মুসিবত থেকে উদ্ধার করতে কোনো না কোনো উপায় বের করে দেন।

তিনি তার নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মনে বার্তা পাঠান, অর্থাৎ আল্লাহ বিপ্লবের উপকরণ তৈরি করে দেন, যেন মাথা থেকে অবৈধ বেইনসাফ শাসকের বোঝা সরাতে পারেন। কায়সার (সিজার) ও কিসরা (খসরু) এই ধরনের আরাম-আয়েশ ও জুলুমের নীতি অনুসরণ করেছিল, এই রোগ থেকে মানবজাতিকে উদ্ধার করতে মরুবাসী নিরক্ষরদের মধ্যে আল্লাহর রাসুলকে (স.) পাঠান। ফেরাউনের ডুবে মরা, সিজার ও খসরুর ধ্বংস এই মূলনীতির ওপর নবুয়তের জন্য আবশ্যকীয় নির্দেশনা হিসেবে গণ্য হবে।’

শাহ সাহেবের দৃষ্টিতে মানুষের সামাজিক জীবনে অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা একটি আবশ্যকীয় বিষয়, এবং মানুষের প্রত্যেক শ্রেণির জন্য এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থাকা জরুরি— যা একজন মানুষের জীবনযাপনের সব প্রয়োজনীয়তা পূরণ হবে, সে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, এবং অনায়াসে কিছু টাকা জমিয়ে রাখতে পারে যেন জরুরতের সময় কাজে লাগে।

জীবনের এই অংশে উন্নতি হলে তারপর মানুষ প্রগতিশীলতা ও সভ্যতা-সংস্কৃতির বিকাশে মনোযোগ দিতে পারবে— আদতে যা মানবজাতির উন্নয়নের চাবিকাঠি, কিন্তু ভাত-কাপড়ের প্রয়োজনেই যদি মানুষ বন্দি হয়ে পড়ে, তাহলে তো তার জীবন জন্তুজানোয়ার থেকে আলাদা নয়, সে কীভাবে উচ্চতর অবস্থানের কথা চিন্তা করবে?

অর্থনৈতিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় ফলাফল হলো সামগ্রিকভাবে মানুষের আত্মিক উন্নয়ন, মনুষ্যজাতি থেকে মানবজাতিতে উন্নীত হওয়া।

এই দুনিয়ায় যখন মানুষের স্বভাবচরিত্র ঠিকঠাক হয়ে যাবে এবং মানসিক বিকাশের মাধ্যমে নিজেকে পূর্ণমানবে উন্নীত করবে, তাহলে আবশ্যিকভাবে মৃত্যুপরবর্তী জীবনের পথপরিক্রমা খুব সহজেই পার করতে পারবে।

তার এই পূর্ণমানব হওয়ার গুণ তাকে জান্নাতের হকদার বানাবে, এর সর্বশেষ পর্যায় হবে স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামিনকে দর্শনের সৌভাগ্য লাভ। যদি মানব সমাজকে এই পদ্ধতিতে উন্নত করা নবুয়তের প্রকৃত উদ্দেশ্য ধরে নেওয়া হয়, তাহলে নবুয়ত মনুষ্যজীবনের স্বভাবজাত জিনিস হয়ে যায়, এমনকি যেখানে পয়গম্বরদের আগমন ঘটেনি সেখানে তাদের অনুগামী সৎকর্মশীল ও দার্শনিকরা যদি এই পদ্ধতিতে কাজ করে তাহলে মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

শাহ সাহেবের দৃষ্টিতে অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা প্রতিষ্ঠার অর্থ এটাই ছিল। কুরআনি শিক্ষার কার্যত বাস্তবায়ন আর অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা প্রতিষ্ঠা— এই দুই নীতি ওলিউল্লাহি ইনকিলাবের (বিপ্লব) মূলকথা। এই বিষয়েই এতক্ষণ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম।

শাহ সাহেব এই প্রোগ্রামকে একটি দলিলি ভিত্তি দিয়ে স্বজাতির চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গের সামনে উপস্থাপন করেন। এইজন্য যে পরিমাণ হাদিসের জ্ঞান রাখা জরুরি, তা হাসিল করা তৎকালীন দিল্লিতে সম্ভব ছিল না, তাই তিনি মক্কা-মদিনার উদ্দেশে হেজাজ ভূমিতে যান। ওইখানে দুই বৎসর তিনি হাদিসের অধ্যয়ন করে মুজতাহিদ পর্যায়ের যোগ্যতা হাসিল করেন।

শাহ সাহেব তখন মক্কা নগরীতে। ২১ জিলকদ ১১৪৪ হিজরি, মোতাবেক ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দে বৃহস্পতিবার রাত্রে শাহ সাহেবকে স্বপ্নযোগে খোদায়ি বার্তা দেওয়া হয়—

১) স্বপ্নে তাকে আশ্বাস দেওয়া হয় তার মাধ্যমে বিদ্যমান নাজুক পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। অর্থাৎ তাকে এই কাজে জিম্মাদার বানানো হয়েছে।

২) তাকে বলা হয় প্রথমে বিদ্যমান সকল ব্যবস্থা ভেঙে তার জায়গায় নতুন ব্যবস্থা প্রণয়নের করতে হবে। অর্থাৎ ভারতবর্ষের মুসলমানদের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক আন্দোলনের প্রধান নেতা হবেন তিনি।

৩) তাকে বোঝানো হয়েছে তার সংস্কার আন্দোলন সফল করার জন্য পারস্পরিক লড়াইয়ের এক লম্বা সিলসিলা সামনে আসছে।

সংক্ষেপে এই স্বপ্নের মূলকথা এমন— শাহ সাহেব ভারতবর্ষে সামগ্রিকভাবে সংস্কারমূলক একটি আন্দোলন শুরু করতে যাচ্ছেন। এই দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে শাহ সাহেব দিল্লি ফিরে আসেন।

সবার আগে কুরআনের ফারসি তর্জমা ‘ফাতহুর রহমান’ রচনা করেন। যেখানে সংক্ষেপে নিজের প্রোগ্রামের কথা বর্ণনা করেন। এবং ১৭৪৩ সালে মানুষজনকে তা পড়াতে শুরু করেন।

শাহ সাহেব ‘ফাতহুর রহমানের’ টীকায় তার দাওয়াতে তাজদিদ (সংস্কারের ডাক)-এর সব নকশা এঁকে রেখে গেছেন। সবার আগে তিনি যেই বিষয়টি সামনে এনেছেন— ইসলামের হুকুমত মক্কাতেই শুরু হয়েছিল। সেটা তার জায়গায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হুকুমত ছিল। যদিও তখনও আইন-অনুশাসনে কড়াকড়ি বা যুদ্ধের অনুমোদন ছিল না।

তিনি মক্কার হুকুমতের আদলে তার আন্দোলন শুরু করেন। যারাই তার হাতে মুরিদ হতেন, এর মধ্য দিয়ে তারা তার রাজনৈতিক কর্মসূচিকে নিজের মত ও পথ মেনে নিতেন। এভাবেই তিনি আধ্যাত্মিকতা চর্চার মধ্য দিয়ে ধীরেধীরে অভ্যুত্থানের দিকে এগোচ্ছিলেন।

আসল কথা হলো যতদিন রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা তৈরি না হবে, ততদিন কেবল লড়াই করে নতুন হুকুমত কায়েম করা সম্ভব না। নিঃসন্দেহে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে পূর্বের শাসনব্যবস্থা ধ্বংস করা যায়, কিন্তু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উপযুক্ত মানুষ যদি শাসনকার্যে না বসানো যায়, তাহলে নতুন হুকুমত টিকিয়ে রাখা সম্ভব না।
আর ওই ধরনের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা স্রেফ কঠোরতা ছাড়া হাসিল করা সম্ভব। প্রত্যেক নতুন আন্দোলন শুরু করার আগে তার পয়গাম দরদমাখা কণ্ঠে অন্যকে বোঝাতে হয়, তাকে নিজেদের অংশ বানাতে আবশ্যিকভাবে কঠোরতা পরিহার করতে হয়। শাহ সাহেব এই মূলনীতির ওপরেই নিজের দল গঠন করতে শুরু করেন। এবং তাতে সফল হন।

রাষ্ট্রপক্ষের কিছু লোক ওই সময় এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ আঁচ করতে পেরেছিল, তাই তারা এই আন্দোলন বানচাল করতে জনসাধারণের মাঝে শোরগোল তৈরি করে, একদিন ফতেহপুর মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় শাহ সাহেবের ওপর হামলাও করে।

শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবি তার চিন্তাদর্শন প্রচার ও তালিমের জন্যে বিশটির বেশি কিতাব লিখেছিলেন। যার সবগুলো দিল্লির ‘উচ্চতর শিক্ষার ভাষা’ আরবিতে এবং ‘জনসাধারণের পাঠের ভাষা’ ফারসিতে ছিল।

এই কিতাবগুলোতে শাহ সাহেব তার প্রোগ্রামের উপায় ও পদ্ধতির বিবরণ দিয়েছেন, কিন্তু এক জায়গায় নয়, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। এর কারণ ছিল তার আন্দোলনের উদ্দেশ্য কোনো অযোগ্য ‘বিপ্লবীর’ হাতে যেন না পড়ে।

ওলিউল্লাহি দর্শন যথার্থভাবে বুঝতে এই হাকিকত সামনে রাখতে হবে যে, শাহ সাহেব উম্মতে মুহাম্মদির একজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের দার্শনিক ও সিদ্দিক (সত্যপন্থী)। তার চিন্তাধারা পূর্ণতাপ্রাপ্ত মহামানব ও নবী-রসুলদের মতো প্রত্যেক মানুষের জন্যে, যদিও আপাতচোখে তিনি নিজ জাতির জন্য কাজ করেছেন।
শাহ সাহেবের কিতাব মনোযোগের সাথে পড়লে বুঝতে পারবেন— যদিও তার ভাষা দিল্লির মানুষের ভাষা ছিল, কিন্তু উদ্দেশ্য ছিল দিল্লির অভিজাত-মধ্যবিত্ত শ্রেনি থেকে শুরু করে একদিকে ইহুদি, খ্রিষ্টান, আরব-অনারব, অন্যদিকে গ্রিক, পারসিক ও আর্য জনগোষ্ঠীর প্রত্যেক সদস্য।

শাহ সাহেব যেই চিন্তাদর্শনকে সামনে আনেন, তা মূলত কুরআনেরই মোজেজা— একথার প্রমাণ যে, কুরআন আল্লাহর কালাম এবং কেয়ামত পর্যন্ত মানবজাতির মৌলিক সব সমস্যার সমাধান। সূত্র: মন ও মননের কথা

More News...

চাঁদ দেখা যায়নি, ব্রুনাই-মালয়েশিয়ায় রোজা শুরু মঙ্গলবার

শবে বরাত কবে, জানাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন