নিজস্ব প্রতিবেদক : সাভার মডেল থানার রাজাশন এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের পোশাক পরিহিত ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। গতকাল বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিস্তল, গুলি, পুলিশের পোশাক ও আইডি কার্ড এবং মাদকসহ বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. শামীম রেজা (৩০), মো. হেলাল উদ্দিন (৩৫), মো. পারভেজ (২৫), ওয়াসিম ইসলাম (২৫), মো. নাইম খান (২৭) ও মো. ফেরদৌস আহমেদ রাজু (২৯)।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজার বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের মূলহোতা মাদক ব্যবসায়ী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী শামীম রেজা। তিনি বিশাল ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন। পুলিশের পোশাক পরে অন্য সদস্যদের নিয়ে ডাকাতি করতেন। নিজেকে পরিচয় দিতেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে।
মোজাম্মেল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দ দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে বৃহস্পতিবার গোপন মিটিং করার সময় তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, নকল পিস্তল, পিস্তল টাইপ লাইটার, কভারসহ হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি, দুই সেট পুলিশের পোশাক, জ্যাকেট, বেল্ট, পুলিশের ভুয়া আইডি কার্ড, রামদা, ডেগার, চাপাতি, ছুড়ি, টর্চলাইট ও রশি জব্দ করা হয়। এ ছাড়া ৪৬৭ পিস ইয়াবা, ৩০ বোতল ফেনসিডিল, দেড় কেজি গাঁজা, হেরোইন, পাঁচ লিটার চোলাই মদ, ১৯টি মোবাইল এবং নগদ ৪৪ হাজার ৫৭০ টাকা জব্দ করা হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ‘ডাকাত দলের সর্দার আসামি শামীম রেজা কিশোর বয়স থেকেই অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী। গ্রামের একটি স্থানীয় স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ২০০৫ সালে ঢাকায় আসেন। একপর্যায়ে নিজে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এবং মাদক কারবারিদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পর্যায়ক্রমে তার নেতৃত্বে একটি ডাকাত বাহিনী গড়ে ওঠে।
র্যাব জানায়, শামীম রাতে পুলিশের ভুয়া ইউনিফর্ম পরে টর্চ লাইট দিয়ে গাড়ি থামিয়ে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও দামি জিনিসপত্র তার বাহিনীর সদস্যদেরকে নিয়ে লুটপাট করতেন।
আসামিদের জিঞ্জাসাবাদে জানা যায়, ২৫-৩০টি অটোরিকশা ও সিএনজির মালিক শামীম। তার নামে অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি নিজেকে পুলিশ বাহিনীর একজন এসআই হিসেবে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র, নকল আগ্নেয়াস্ত্র, নকল আইডি কার্ড, ইউনিফর্ম, ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করতেন। তিনি সাভার এলাকায় একটি সক্রিয় ডাকাত বাহিনী ও মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, তিনি বিভিন্ন সময়ে ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তা সেজে তার বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতেন। সব আসামির নামেই সাভারসহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানিয়েছে র্যাব।