লবণ সহিষ্ণু লাল জাতের শিম উদ্ভাবন

লবণ সহিষ্ণু লাল জাতের শিম উদ্ভাবন

গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) এক বিজ্ঞানী লবণ সহিষ্ণু, উচ্চ ফলনশীল, জাব পোকা (এফিড) প্রতিরোধী লাল রঙয়ের (অ্যান্থসায়ানিন যুক্ত) শিম উদ্ভাবন করেছেন। সম্প্রতি এ জাতের শিমটি কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন পেয়েছে।

লাল জাতের শিমের উদ্ভাবক মো .গোলাম রসুল বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চল থেকে সংগৃহীত কৌলিসম্পদ হতে বিশুদ্ধ সারি নির্বাচন পদ্ধতি অনুসরণ করে শিমের এ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিইউ শিম-৭ জাতের কাণ্ডের রঙ গাঢ় বেগুনি। পাতার রঙ গাঢ় সবুজ হলেও ফুলের রঙ হয় বেগুনি। এতে অ্যান্থোসাায়নিনের উপস্থিতির কারণে এ জাতের শিমের রঙ গাঢ় লালচে হয়।

তিনি জানান, প্রতি শিমের (ফলন) আকার ১২ সে.মি থেকে ২.৫ সে.মি। প্রতি শিমে বীজের সংখ্যা থাকে ৪/৫টি। প্রতি গাছে ভক্ষণযোগ্য শিমের পরিমাণ হয় ২.৪ কেজি থেকে ৩.৫ কেজি এবং হেক্টর প্রতি ফলন হয় ৩৫ টন। এগুলো উচ্চ ফলনশীল ও জাব পোকা (এফিড) প্রতিরোধী।

এ গাছে অ্যান্থসায়ানিন পরিমান ২৯ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। এ অ্যান্থসায়ানিন মানব দেহের মাংসপেশীর প্রদাহ হ্রাস, রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ এবং ক্যান্সার মোকাবিলায় ভূমিকা রাখে। সম্প্রতি এ জাতের শিমটি কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন পেয়েছে।

বীজ বপন/সার প্রয়োগ: দেশের সকল জেলাতেই শীত মৌসুমে এ জাতের বীজ রোপণ করলে হয়। গোবর মাটির মিশ্রনে ভরা ছোট পলিথিনে চারা গজিয়ে পরবর্তীতে মাঠে চারা লাগানোই উত্তম। প্রতি গর্তে ১০ কেজি পঁচা গোবর, ১০ গ্রাম ইউরিয়া (দুইবারে), ৩০ গ্রাম টিএসপি ও ২০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে।

এ শিম খরা সহিষ্ণু। তবে মাটিতে আদ্রতার পরিমান বেশি কমে গেলে গাছের গোড়ায় পানি/সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। ফুলের পরাগায়ন এবং কঁচি ফলের বৃদ্ধি পর্যায়ে মাটির রস/আদ্রতা বিশেষ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। শীতকালে নিয়মিত বিরতিতে স্বল্প সেচ গাছ ও ফলের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

বাউনি/মাচা: এ জাতের শিমের জন্য এক কঞ্চিবিশিষ্ট বাউনি বা মাচা চাষ পদ্ধতিতে একটি কঞ্চিসহ বাঁশের মাথা, মাচা, ভি-আকৃতির গাছের ডালা কিংবা উলম্বভাবে ঝুলানো নাইলনের সুতার জাল ব্যবহার করা যেতে পারে। উন্মুক্ত গাছের পাতা যতবেশি সূর্যালোক পাবে ফলন তত বেশি হবে। গাছের আকার ও ফলন বিবেচনায় এটি ছাদ কৃষির জন্য একটি চমৎকার ফসল।

পোকামাকড় দমন: এ জাতটি জাব পোকা প্রতিরোধী। তবে অন্যান্য শিমের মতো খুদে মাকড় বা রেডমাইটের আক্রমণ দেখা দিতে পারে। খুদে মাকড় বা রেডমাইটের আক্রমণ দেখা দিলে প্রতিকারের জন্য ভার্মিটেক/ওমাইট ১৫ গ্রাম ১০ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে গাছে প্রয়োগ করতে হবে।

বীজ লাগানোর ১৩০ দিনের মধ্যে শিম সংগ্রহ করা যায়। তবে বীজ সংগ্রহের জন্য আরও ২০ দিন সময় বেশি লাগবে। দুই থেকে চার মাস একই গাছ থেকে শিম সংগ্রহ করা যাবে।

More News...

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া গেল পৌনে ৮ কোটি টাকা