পাহাড় কেটে সংযোগ সড়ক

পাহাড় কেটে সংযোগ সড়ক

বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের রুমার সেই বিতর্কিত সেতুটির বৈধতা দিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবার পাহাড় কেটে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সড়ক নির্মাণের আগে করা সেতুটি নিয়ে কিছুদিন ধরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সেতুটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির সদস্যরা গত রোববার সরেজমিন তদন্তে যান। এ সময় তাঁরা স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এলজিইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা।

তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনাদের-আমাদের চাপে পড়ে টেন্ডারের আগেই রাস্তার কাজটি শুরু করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেমন খালি চোখে দেখছি, ব্রিজটি পাহাড়ের ভেতর ঢুকে গেছে, ঠিক তেমনি আপনারাও দেখছেন। তবে সেটি আমাদের বিবেকের চোখে দেখতে হবে।’ এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছেই প্রশ্ন করেন, ব্রিজটি করা কতটুকু যৌক্তিক? সাংবাদিকেরা বলেন, ব্রিজ করা নিয়ে তাঁদের কোনো বক্তব্য নেই। তবে রাস্তা হওয়ার অনেক আগেই এটি নির্মাণ করায় সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তোলেন। সেই প্রশ্নগুলোই সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

এ সময় এলজিইডির বান্দরবান কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হওয়ায় তাঁরা ব্রিজটির সংযোগের জন্য রাস্তার কাজ ধরেছেন।’

সেতুটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাসুদ পাটোয়ারীর সই করা এক পত্রে কমিটির প্রধান করা হয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমানকে। অন্য দুজন হলেন রাঙামাটি সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক নুর নবী এবং বান্দরবান জেলার উপপরিচালক স্থানীয় সরকার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুৎফুর রহমান।

গত রোববার দুপুর ১২টার দিকে দলটি বান্দরবানের রুমা উপজেলার রুমামুখ-গ্যালেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ সংযোগের সেতুটি সরেজমিনে তদন্তে যায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এলজিইডির বান্দরবান কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিল্লুর রহমান, রুমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়ামিন হোসেন, উপজেলা প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) জামাল উদ্দিনসহ বান্দরবান ও রুমার কয়েকজন সাংবাদিক।

জানা গেছে, এই রাস্তার কাজের জন্য ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ২০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। তবে রাস্তা করতে বিশাল পাহাড় কাটা হচ্ছে। অনুমোদন পাওয়ার আগেই পাহাড় কাটা হচ্ছে বলে পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান কার্যালয়ের পরিদর্শক আবদুল সালাম গতকাল সোমবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এলজিইডি রাস্তা করার জন্য পাহাড় কাটার একটি আবেদন করেছে। সেই আবেদন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। তবে এখনো অনুমোদন হয়নি। লোকমুখে শুনেছি পাহাড় কাটার কথা।’

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রুমা মুখ-গ্যালেঙ্গা সড়কে ৬৮ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ শুরু হয়। গত অর্থবছরে নির্মাণকাজ শেষ হয়। তবে রাস্তার আগে সেতুটি নির্মাণ করা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। আজকের পত্রিকা অনলাইন

More News...

ওবায়দুল কাদেরের মস্তিষ্ক অলস-হৃদয় দুর্বল : রিজভী

ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন অনেকে, স্টেশনে ভিড়