সত্য কথা বলুন, চামচাগিরির প্রয়োজন নেই: ওবায়দুল কাদের

সত্য কথা বলুন, চামচাগিরির প্রয়োজন নেই: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কারও চামচাগিরি এবং তোয়াজ-তোষণ করার প্রয়োজন নেই।

সচিবালয়ে বুধবার ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন কাদের। তিনি বলেন, সচিবালয়ে যারা কাজ করেন, শেখ হাসিনার সরকার আপনাদের কাছে সততা চায়, স্বচ্ছতা চায়, নিরপেক্ষতা চায়। পক্ষ নিয়ে এখানে তোয়াজ-তোষণ করবেন এটা আমরা চাই না। এই তোয়াজ-তোষণের ফল ভালো নয়, পরিণতি শুভ নয়।’

‘কর্মকর্তাদের সঙ্গে, প্রশাসনের সঙ্গে, ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে একটা সেতুবন্ধন থাকতেই হবে। আইন প্রণেতারা আইন প্রণয়ন করবেন। আর পলিসি নির্ধারণ করবেন রাজনৈতিকেরা, সেটা বাস্তবায়ন করবেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে সেখানে বিরোধপূর্ণ কোনো পরিবেশ প্রত্যাশিত নয়। সেখানে সংঘাতের কোনো অবস্থা, সংঘাত-সংকুল অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। যার যার অবস্থানে তার তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। সত্য কথা বলুন, নিরপেক্ষভাবে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করুন। চামচাগিরি করা, তোয়াজ-তোষণ করার কোনো প্রয়োজন নেই।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা শেখ মুজিবকে ইতিহাস থেকে মুছে দিতে দিয়েছিল, তারাই আজ ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাচ্ছে। এটা হলো ইতিহাসের অমোঘ সত্য। তাদেরই ঠাঁই হচ্ছে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। বিএনপি সরকারের উন্নয়ন দেখে না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। তারা পূর্ণিমার ঝলমলে আলোতে অমাবস্যার অন্ধকার দেখে।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগের বাংলাদেশকে দেখেছি। ১৫ আগস্টের পরের ছবিও দেখেছি। আমার ভয় হয় যখন আমি সচিবালয়ে আশপাশে বিলবোর্ড, পোস্টার আর ব্যানারের ছড়াছড়িতে আকাশ পর্যন্ত ঢেকে গেছে এমন পরিবেশ দেখি। চোখের পলকে ১৫ আগস্ট ঘটে গেল, যাদের দেখতাম নব্য আওয়ামী লীগার সেজে মুজিব কোর্ট পরত, ১৫ আগস্টের পর মুজিব কোর্ট লুকানোর দৃশ্যপটও ভুলিনি। আজ সারা বাংলাদেশের যত্রতত্র অনেকেই বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তুলেছে। যদি হঠাৎ চোখের পলকে কোনো অঘটন ঘটে যায়, তখন কী এ সব ম্যুরাল রাখবেন। যারা ম্যুরাল স্থাপন করেছেন তারাই ভেঙে ফেলবেন। এই দৃশ্যপট অনেক দেখেছি।

কাদের বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি, আপনারা যদি আমার চেয়েও বড় আওয়ামীলীগার হন, তাহলে দুঃখ লাগে। এখন অনেকেই নব্য আওয়ামী লীগার আমাদের চেয়েও যেন বড় আওয়ামী লীগার। কথায় কথায় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। কিন্তু এটা কী মনের কথা? অনেককেই দেখেছি ১৫ আগস্টের আগে কী বক্তব্য দিয়েছেন। ১৫ আগস্ট ঘটার পর রাতারাতি ভোল পাল্টে ফেলেছে। এই ভোল পাল্টানো আওয়ামী লীগারদের আমার প্রয়োজন নেই।

শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সচিবালয়ে স্বস্তির পরিবেশ বজায় আছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, সচিবালয়ে কথায় কথায় মারামারি দেখেছি। সচিবালয়ে দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্মবিরতি দেখেছি, ধর্মঘট দেখেছি। অচল করার হুমকিও দেখেছি। আমি আশা করি ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. খাইরুল ইসলাম সভায় বক্তব্য দেন।

More News...

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল

আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী