কাবুলের পতনকে যুক্তরাষ্ট্রেরই পরাজয় হিসেবে দেখেছে আফগানরা

কাবুলের পতনকে যুক্তরাষ্ট্রেরই পরাজয় হিসেবে দেখেছে আফগানরা

নিউজ ডেস্ক : আফগানিস্তানে আবার পুনরুত্থান ঘটেছে তালেবানের। কাবুলের নেতৃত্ব এখন তাদেরই হাতে। ক্ষমতা দখলে তাদের থামাতে আফগান বাহিনীকে কোনো ধরনের প্রতিরোধ গড়তে দেখা যায়নি। বরং দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন পশ্চিমা সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি।

সার্বিক বিবেচনায় আফগানিস্তান আসলে কোন পথে যাচ্ছে? কী হচ্ছে সেখানে, আগামীতে কী হতে পারে? এ নিয়ে জাগো নিউজ আয়োজন করেছে ‘কোন পথে আফগানিস্তান’ শীর্ষক আলোচনা।

সহকারী সম্পাদক ড. হারুন রশীদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন ইরাক ও আফগান যুদ্ধ-সংবাদ সংগ্রহের জন্য খ্যাত সাংবাদিক ও বিশ্লেষক আনিস আলমগীর এবং কলাম লেখক লীনা পারভীন।

তালেবানের ক্ষমতা দখল নিয়ে সাংবাদিক আনিস আলমগীর বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অন্যদের মতো হতাশ নই। এটি সূচনা মাত্র। এটি আফগান জনগণের জন্য খুব কাঙিক্ষত ছিল। কারণ যখন ২০ বছর আগে তালেবানদের হটিয়ে আমেরিকানরা ক্ষমতা দখল করল, তখন সবাই আশা করেছিল যে সেখানে স্থিতিশীলতা আসবে। কিন্তু তা কি হয়েছে?’

বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দুই ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেছে (আফগানিস্তানে), ২৩০০ আমেরিকান সৈন্য প্রাণ হারিয়েছেন। ফলে কাবুলের পতনকে বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয় হিসেবেই দেখবেন। আফগান জনগণও এভাবেই দেখছে। ১৯৭৫ সালে আমেরিকানরা যেভাবে ভিয়েতনাম থেকে গিয়েছিল, এবারও তারা তিন হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে তাদের নাগরিকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য।’

বিষয়টি প্রত্যাশিতই ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি প্রত্যাশিত বলব না, এটা অস্বাভাবিক ছিল না। আমেরিকার সঙ্গে তাদের যে আলোচনার প্রক্রিয়া চলছিল তাতে এটি স্বাভাবিক ছিল। আবার কোনো শহরে কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি। আফগান জনগণ তাদের স্বাগত জানিয়ে এনেছে।’

যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি নিয়ে আনিস আলমগীর বলেন, ‘যে চুক্তি হয়েছিল ২০২০ সালে (দোহায়), সেটি ছিল অনেকটা নাকে খত দেয়ার মতো। তালেবান কিন্তু সে চুক্তি ভঙ্গ করেনি। তারা আমেরিকানদের ওপর হামলা করেনি। এরই ধারাবাহিকতায় এক এক করে শহর দখল করতে করতে তালেবানরা কাবুল দখল করল।’

তালেবানের ক্ষমতায় আসা নিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছর ধরে তালেবানকে পুরোপুরি ক্ষমতার বাইরে রেখেছে। কিন্তু তারা যে পশতু জনগোষ্ঠী থেকে এসেছে, সেটি সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউকে তো ক্ষমতার বাইরে রেখে স্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি কোনো কিছু করা সম্ভব নয়।’

তালেবানের পুনরুত্থান নিয়ে লীনা পারভীন বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে আছি এই নিয়ে যে, সেখানে নাকি হিজাব পরা ছাড়া চলাফেরা করা যাবে না। নারী অধিকারকর্মী, নারী শিক্ষা নিয়ে যারা কাজ করেছে তারা ভয়ংকর আতংকের মধ্যে রয়েছে। কারণ ২০ বছর ধরে সেখানে নারী অধিকার, নারী শিক্ষা নিয়ে যে কাজ হয়েছে, তার আগে তালেবানদের শাসনামল ছিল এর বিপরীত।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল তালেবানের এক নেতা বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তারা নারী শিক্ষা বন্ধ করবেন না। কিন্তু তাদের এই কন্ট্রোল কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে থাকবে কি-না তা নিয়ে আমি সন্দিহান। কারণ তারা যেহেতু মৌলবাদী একটি দল, তাই তারা ইসলামের উদারনৈতিক বিষয়গুলো মানবে বলে আমার মনে হয় না।’

 

More News...

কোন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল?

৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ