সেই কুমিরটি এখন গাজীপুরের সাফারি পার্কে

সেই কুমিরটি এখন গাজীপুরের সাফারি পার্কে

ফরিদপুর প্রতিনিধি : অবশেষে ফরিদপুরে চরের জলাধারে আটকা পড়া সেই কুমিরটিকে বন্য প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা গাজীপুরের সাফারি পার্কে পাঠিয়েছেন।

গাজীপুরে সাফারি পার্কে নিয়ে এই কুমিরটির মাধ্যমে প্রজনন ঘটানোর সম্ভাবনা দেখছেন তারা। খুলনায় কুমিরটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে।

গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বন্য প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বিভাগীয় কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল। তিনি বলেন, গাজীপুরের সাফারি পার্কে একটি পুরুষ কুমির রয়েছে। ফরিদপুরের চরের জলাধারে আটকা পড়া কুমিরটি সেখানে নেয়া হচ্ছে। এই কুমির দুটির মাধ্যমে দেশে বিলুপ্তপ্রায় মিঠা পানির কুমিরের ব্রিডিং করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।

সংরক্ষণ বিভাগ ও গাজীপুরের সাফারি পার্ক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের মাগুরায় মধুমতী নদী থেকে এলাকাবাসী একটি পুরুষ কুমির আটক করেন। পরে সেটি গাজীপুরের সাফারি পার্কে নেয়া হয়। ৮-৯ বছর বয়সী পুরুষ ওই কুমিরটির নাম ‘মধু’। সাফারি পার্কে ভারত থেকে আনা আরও দুটি কুমির রয়েছে। সে দুটি মাদি হলেও অতিরিক্ত বয়স হয়ে গেছে। ফলে তারা প্রজননক্ষমতা হারিয়েছে। ফলে সেখানে পুরুষ কুমিরটির সঙ্গী হতে চলেছে ফরিদপুরের মাদি কুমিরটি, যার বয়স এখন ১২-১৪ বছর।

ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের একটি জলাধারে কুমিরটি আস্তানা গেড়েছিল। গত ২৪ জুলাই সকালে সেটিকে দেখতে পান এলাকাবাসী। দুই দফায় কুমিরটিকে উদ্ধারে ব্যর্থ অভিযান চালায় বন্য প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। তবে গত সোমবার দুপুরে সেটিকে আটক করেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।

কুমিরটিকে নিতে ফরিদপুরে আসেন বাগেরহাটের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির হাওলাদারসহ ১০ সদস্যের একটি দল। সোমবার রাত নয়টার দিকে কুমিরটিকে নিয়ে খুলনার পথে রওনা হয় দলটি। রাত তিনটার দিকে তারা খুলনা শহরের ছোট বয়ড়া এলাকায় অবস্থিত বন্য প্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে পৌঁছায়। সেখানে মঙ্গলবার সকালে কুমিরটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।

পরীক্ষা করেন কর্মকর্তা আজাদ কবির হাওলাদার। তিনি বলেন, ধরা পড়ার সময় কুমিরটি স্থানীয় লোকজনের হাতে অল্পস্বল্প আঘাত পেয়েছে। তারপরও এটির শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। বাহ্যিকভাবে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। শরীরের ভেতরে কোনো ক্ষত আছে কি না, তা বুঝতে আরও কয়েক দিন লাগবে। সাত ফুট সাত ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের কুমিরটির ওজন ৮০ কেজির কাছাকাছি।

আজাদ কবির হাওলাদারের নেতৃত্বাধীন দলটি মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে খুলনার বন্য প্রাণী উদ্ধার কেন্দ্র থেকে কুমিরটিকে নিয়ে গাজীপুরের সাফারি পার্কের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত আটটায় দলটি মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে নদী পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। বুধবার ভোররাতে কুমিরটি গাজীপুরের সাফারি পার্কে পৌঁছাতে পারে বলে জানান কর্মকর্তারা।

সাফারি পার্কের পরিচালক জাহিদুল কবির বলেন, ২০১৬ সালে মাগুরা থেকে উদ্ধার পুরুষ কুমিরটি প্রাপ্তবয়স্ক হতে শুরু করেছে। এই সময়ে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার হলো মাদি কুমিরটি। এই কুমির দুটির মাধ্যমে প্রজনন ঘটিয়ে দেশে মিঠা পানির কুমিরের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।

More News...

১৭৩ জন বাংলাদেশী মিয়ানমার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান