নতুন ধরনের পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী

নতুন ধরনের পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের জিপিএ দ্বারা তাদের প্রকৃত মেধান মূল্যায়ন করা যাবে না। এ কারণে জিপিএ ৫ পাওয়ার এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। জিপিএ বেশি পাওয়ার প্রবণতা থেকে সবাইকে বের করে আনা হবে। সে জন্য নতুন ধরনের পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হচ্ছে।

শনিবার শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এর ‘কলম’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন।

ইরাবের সভাপতি ও দৈনিক সমকালের বিশষ প্রতিনিধি সাব্বির নেওয়াজের সভাপতিত্বে ও ইরাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম সুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বিশিষ্ট সাংবাবদিক শফিফুজ্জামান পিন্টু, স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির নেতা শাজাহান সাজু, ইরাবের যুগ্ম সম্পাদক ও ম্যাগাজিনের সদস্য সচিব মীর মোহাম্মদ জসিম প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা কি শিখল সেটি বড় বিষয় হচ্ছে না। কে কত জিপিএ পেয়েছে সেটি নিয়ে সবার উৎসাহ তৈরি হয়েছে। এই অসম প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের বের করে আনা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবেশ তৈরি করা হবে। তার মাধ্যমে যার মধ্যে যে ধরনের প্রতিভা রয়েছে সেটি বিকশিত করা হবে। এ জন্য উপযুক্ত কারিকুলাম তৈরি করা হচ্ছে।

দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা শিখছে কিন্তু সে নিজে বলতে পারছে না। তার কারণ আমাদের কিছু ঘাটতি রয়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা হচ্ছে। আগে ক্লাস শিক্ষকরা নিয়োগের তিন থেকে চার বছর পর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সুযোগ পেত। বর্তমানে সেটি পরিবর্তন করা হচ্ছে। কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণবিহীন অবস্থায় পাঠদানের জন্য ক্লাসে যাবেন না, সেটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষা সেক্টরে এমন কোন বাণিজ্য নেই যেটার কবলে আমরা পড়িনি। করোনায় শিক্ষা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতি পোষাতে প্রণোদনা প্রয়োজন আছে। কারণ শিক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, আমাদের ইন্টারনেটের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ সম্প্রতি ইন্টারনেটে সক্ষমতা নিয়ে যে রিপোর্ট এসেছে সেখানে বাংলাদেশ ১৩৭ টি দেশের মধ্যে ১৩৫তম।

তিনি আরো বলেন, ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রমে সকল শিক্ষকদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ এখানে নগরায়নের শিক্ষকরা সুবিধা বেশি পাচ্ছেন। শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। আমরা অনেক ক্ষেত্রে অনেক আইন দেখি। কিন্তু সেটির মনিটরিং এবং বাস্তবায়ন জরুরি। আমাদেরকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী যে সমস্ত অর্জনগুলো রয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধারেও আমাদের সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষায় কাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছিলাম। করোনা আমাদেরকে বাধাগ্রস্থ করেছে। এরপরও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দুই-একটি ছাড়া বাকিগুলো কার্যক্রম আমরা করতে পেরেছি। আমাদের মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক ঘাটতি ছিল। আমরা ইতিমধ্যে সেটি পূরণ করার চেষ্টা করেছি। এসব স্কুলে দুই হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর বেসরকারি স্কুল কলেজ পর্যায়ে আমরা ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে তারা নিয়োগ পাবেন।

কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, পিএসসির পক্ষ থেকে এক হাজার ২০০ শিক্ষকের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। এছাড়া সাড়ে চার হাজার শিক্ষকের নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাক্রম পরিবর্তনে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে এবং মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে আমাদের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

More News...

ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন অনেকে, স্টেশনে ভিড়

দ্বীপ উন্নয়ন-কৃষি জমি সুরক্ষা আইন করতে সংসদকে হাইকোর্টের পরামর্শ