৪০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরছিল পুলিশ কোস্টার, মধ্যরাতে ​আটক

৪০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরছিল পুলিশ কোস্টার, মধ্যরাতে ​আটক

নাটোর প্রতিনিধি : লকডাউনে সাধারণ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসার পথে নাটোরে পুলিশ বিভাগের লোগোযুক্ত একটি টেলিকম গাড়ি আটক করা হয়। মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে নাটোর শহরের চকরামপুর এলাকা থেকে ওই টেলিকম কোস্টারটি আটক করা হয়। এ সময় ওই কোস্টারে ঢাকাগামী প্রায় ৪০ জন যাত্রী ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কোস্টারের যাত্রীরা জানায়, পুলিশ বিভাগের লোগোযুক্ত নম্বরবিহীন ওই কোস্টার মঙ্গলবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যাত্রী ওঠানো হয়। যাত্রীদের অধিংকাংশ ছিলেন গার্মেন্টসকর্মী। যাত্রীদের অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি রাস্তায় আটকাবে না বলে বেশি ভাড়া নিয়ে গাদাগাদি করে লোক তুলেছে।

আমেনা বেগম, রুনা বেগম ও হোসেন আলীসহ গাড়ির কয়েকজন যাত্রী বলেন, নাচোল শ্যামলী কাউন্টারের মাস্টার চালকের সাথে কথা বলে তাদের এ গাড়িতে তুলে দিয়েছে। আমাদের সামনে ওই মাস্টার তাদের স্যারের সাথে কথা বলেছে। পুলিশের গাড়ি রাস্তায় আটকাবে না বলে বেশি ভাড়া আদায় করে গাদাগাদি করে লোক তুলেছে তারা। নিরাপদে যাওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। কোস্টারটি ২৬ সিটের হলেও তাতে প্রায় ৪০ জন যাত্রী ওঠানো হয়।

এদিকে পুলিশের ওই টেলিকম কোস্টার গাড়িটি ঢাকায় যাওয়ার পথে নাটোর শহর অতিক্রম করার সময় চকরামপুর এলাকায় পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সাথে লেগে পুলিশ টেলিকমের কোস্টারটির লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। গ্লাস ভাঙাকে কেন্দ্র করে ট্রাকচালক তোরাব আলী ও হেলপার কাসেমের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন কোস্টার চালক ফিরোজ হাসান। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক জরুরিসেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। পরে নাটোর থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয় এবং গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

কোস্টার চালক ফিরোজ হাসান জানান, মঙ্গলবার ঢাকার রাজারবাগ থেকে সাতজন পুলিশ অফিসারকে সরকারি করটারে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নামিয়ে দেয়া হয়। ফেরার পথে পুলিশ টেলিকম এন্ড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বরত ওসি টান্সপোর্ট রেজাউল করিমের নির্দেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে নাচোল থেকে কয়েকজন গার্মেন্টসকর্মী যাত্রী নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হন তিনি।

তিনি বলেন, কতো টাকা ভাড়া মিটিয়েছে তা ওসি স্যার জানে। সম্পূর্ণ অনিয়ম হলেও রেজাউল স্যার সরকারি গাড়িতে লোক তুলে আনতে বলেছে। স্যারের হকুমে এই কাজ করেছি। গাড়িটি পুলিশ বিভাগের সরকারি গাড়ি। এটি ঢাকায় সরকারি কাজে ব্যবহার হয়। তবে ট্রাক চালকের কাছে টাকা দাবির অভিযোগ সঠিক নয়। লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলা নিয়ে ট্রাকচালক ও হেলপারের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়েছে মাত্র।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী ওই কোস্টারচালক ফিরোজ হাসানের মাধ্যমে ওসি-টান্সপোর্ট রেজাউল করিমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গাড়িটি পুলিশ বিভাগের সরকারি গাড়ি। তবে লকডাউন হওয়ার কারণে সাতজন পুলিশ অফিসারকে ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নামিয়ে দেয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। চালক যাত্রী তুলে নিজে বাঁচার জন্য আমার কথা বলেছে। এটি অনিয়ম হয়েছে। তিনি কোনভাবেই জড়িত নন বা এ ধরনের কোনো নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ তিনি মিথ্যা বলে দাবি করেন।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি ওই গাড়িতে যাত্রী ওঠানোর বিষয়টি প্রমাণিত। ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। পরে সকল যাত্রীকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।

More News...

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা